কলকাতা, ১৮ নভেম্বর:ভারতীয় বামপন্থী রাজনীতি, মাওবাদী কার্যকলাপ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির জটিল যোগসূত্র নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন বিজেপি নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি তার এক্সহান্ডেলে একটি পোস্ট করে তিনি দাবি করেন, “জঙ্গলে যেটা মাওবাদ, শহরে সেটা মার্কসবাদ মূলত একই ধারার ভারতবিরোধী মনোভাব।”
এখানেই থেমে থাকেননি তরুণজ্যোতি। তিনি বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থাকার অভিযোগ করেন। তাঁর কথায় “ভারতের সরকার শক্তিশালী, তাই তারা নামতে পারেনি। তিনি অভিযোগ করেন,বামেরা অনেকেই বিদেশি এজেন্ডাকে সমর্থন করেছে। তারই একটি উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন কলকাতায় বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থনে মিছিলকে।
শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড! বাংলাদেশের সেই আদালত আসলে কতটা ‘আন্তর্জাতিক’?
তরুণজ্যোতির অভিযোগ, ভারতের বামপন্থীরা মানবাধিকারের আন্দোলন বা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যতটা সরব, বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ক্ষেত্রে ঠিক ততটাই নীরব।তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন প্যালেস্টাইন নিয়ে মিছিল, ওয়াকফ বোর্ড ইস্যুতে অবস্থান, এবং পশ্চিমবঙ্গের বিশেষ কিছু হত্যাকাণ্ডে বাম আইনজীবীদের ভূমিকা।
তার কথায় “Urban Naxals, Maoist, Left সবটাই এক। শুধু মুখোশ আলাদা।” তরুণজ্যোতির দাবি, ভারতের অভ্যন্তরে যারা বিদেশি স্বার্থে কাজ করে, তাদের চিহ্নিত করাই এখন দেশের মানুষের দায়িত্ব। তিনি বলেন “জঙ্গলে যে মাওবাদ, শহরে সেই মার্কসবাদ। ভারতের শত্রুকে চিনুন, মুখোশ খুলে দিন।”
তরুণজ্যোতির মতে ভারতের বামফ্রন্ট দীর্ঘদিন ধরেই “ভারতীয় ভাবনা ও রাষ্ট্রনীতির বাইরে” অবস্থান করছে। তাঁর অভিযোগ, তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো দেশের ভিতরেই “অন্তর্দ্বন্দ্ব উস্কে দেওয়ার শক্তি” হিসেবে কাজ করে। এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতিতে নতুন তর্কের জন্ম দিয়েছে।বক্তব্যে তরুণজ্যোতি উল্লেখ করেন বাংলাদেশে গত বছরের ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ। তাঁর দাবি সেই আন্দোলনের আড়ালে সাজানো হয়েছিল একটি “আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র”। তিনি বলেন
“মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য থাকা কোটাকে কেন্দ্র করে কোর্ট যখন বলল কোটা থাকবে, তখন হাসিনা সরকার রায়কে চ্যালেঞ্জ করল। মামলা পেন্ডিং থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে ছাত্র আন্দোলনের নাটক জোরদার হল। এর পিছনে ছিল আমেরিকার দালাল ইউনুসকে প্রতিষ্ঠা করা, এবং বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার গভীর পরিকল্পনা।”
তিওয়ারি অভিযোগ করেন, “সোরোস ও আন্তর্জাতিক ডিপ স্টেট এর যৌথ চক্র বাংলাদেশকে অস্থির করতে চেয়েছিল। তাঁর দাবি, আমেরিকার নির্দেশ না মানা যে কোনও সরকারকেই সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে এই শক্তিগুলোর।
বিজেপি নেতার বক্তব্য আরও তীব্র হয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রসঙ্গে। তাঁর দাবি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশে “হিন্দু নিধন” শুরু হয়, হাজার হাজার মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়। “কারণ একটাই যদি হাসিনা আমেরিকার কথা মানতেন, তাহলে তাঁর সরকার পড়ত না,” মন্তব্য তরুণ জ্যোতির।
