HomeWest BengalKolkata City‘মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাবেন না’, শুভেন্দুর মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড়

‘মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাবেন না’, শুভেন্দুর মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড়

- Advertisement -

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল কাশ্মীর নিয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্য করে বাঙালি পর্যটকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাবেন না। কোনও বাঙালির সেখানে যাওয়া উচিত নয়।” এই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি জাতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।

এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ রাজনীতির একাধিক মহল। অনেকে বলছেন, এই ধরনের উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য দেশের সংহতির পরিপন্থী। বিশেষ করে যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে দেশবাসীকে কাশ্মীর ভ্রমণের আহ্বান জানাচ্ছেন, সেখানে তাঁর দলেরই একজন শীর্ষ নেতা এমন মন্তব্য করায় তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্বের পরিবেশ।

   

প্রধানমন্ত্রী বনাম রাজ্যের বিজেপি নেতা— দ্বিধাবিভক্ত বার্তা?

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদি বারবার কাশ্মীরের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার কথা তুলে ধরে দেশবাসীকে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “নতুন কাশ্মীর শুধু সৌন্দর্যে নয়, নিরাপত্তার দিক দিয়েও প্রস্তুত পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য।”

তবে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছে, এতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। একই দলের দুই স্তরের নেতার বক্তব্য বিপরীতমুখী হওয়ায় সাধারণ মানুষ কাকে বিশ্বাস করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বিরোধীদের কড়া প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “শুভেন্দু বাবুর মন্তব্য চূড়ান্ত ধৃষ্টতা। দেশের সংবিধান অনুসারে, প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার আছে দেশের যেকোনও প্রান্তে যাওয়া ও থাকা। তিনি কি দেশের সংবিধানকে অস্বীকার করছেন?”

সিপিএম নেত্রী মহম্মদ সেলিম বলেন, “এই বক্তব্য একেবারে সাম্প্রদায়িক। বিজেপির প্রকৃত মুখ এভাবেই প্রকাশ পায়— বিভাজনের রাজনীতি, ধর্মীয় মেরুকরণ। এটা ভীষণ বিপজ্জনক।”

শুভেন্দুর বক্তব্যের ব্যাখ্যা

বিরোধের মাঝে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, তিনি নাকি সাম্প্রতিক কিছু নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেছেন, যেখানে কিছু বাঙালি পর্যটক কাশ্মীরে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে তা সত্ত্বেও এভাবে ‘মুসলিম অধ্যুষিত’ এলাকা বলে চিহ্নিত করে গোটা একটি অঞ্চল সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন অনেকেই।

পর্যটন ব্যবসায় প্রভাব?

কাশ্মীরের পর্যটনশিল্প ইতিমধ্যেই করোনা ও ৩৭০ ধারা বাতিল-পরবর্তী রাজনৈতিক উত্তেজনার ধাক্কা সামলে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী ও পর্যটন মন্ত্রকের চেষ্টায় আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে উপত্যকা। এরই মধ্যে এই ধরনের নেতিবাচক বার্তা সেখানে পর্যটক আগমন কমাতে পারে বলেই আশঙ্কা পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলেছেন, “কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সেখানে গিয়েই ভারতের সৌন্দর্য উপভোগ করা উচিত। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনও অঞ্চলকে বর্জন করার কথা বলা মানে বিভেদের রাজনীতি।”

- Advertisement -
Suparna Parui
Suparna Paruihttps://kolkata24x7.in/author/suparna-parui
হাতেখড়ি চ্যানেলে। খবরের গন্ধ শনাক্ত করার কৌশল শেখা সেখান থেকেই। তারপর ৬ বছর ধরে বিনোদন রাজনীতির খবরের ব্যবচ্ছেদ করে চলেছি। খবর শুধু পেশা নয়, একমাত্র নেশাও বটে।কাজের পাশাপাশি সিনেমা দেখতে, গান শুনতে, বেড়াতে যেতে খুব ভালোলাগে। তাই সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি নতুন অ্যাডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে।
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular