“মোদীজি দেশের গ্যারান্টি, আমি রাজ্যের”, বিস্ফোরক শুভেন্দু

Court Pulls Suvendu Adhikari’s Protection, 5 Cases Referred to Joint SIT

বাংলার রাজনীতিতে আবারও উত্তাপ বাড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিহারে ভোটার তালিকা সমীক্ষায় ৫০ লক্ষ নাম বাদ যাওয়ার প্রেক্ষিতে বাংলার জন্য আরও বড় সংখ্যার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, “বিহারে ৫০ লক্ষ নাম বাদ গেলে, বাংলায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলিমের নাম বাদ যাবে।” এই মন্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে বিতর্কের ঝড়।

Advertisements

কমিশনের প্রস্তুতি এবং সম্ভাব্য সমীক্ষা

   

বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ। সেখানে সমীক্ষা ও খসড়া তালিকা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার সমীক্ষার সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সেই জল্পনাকে উস্কে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল ইতিমধ্যেই চারটি জেলার নির্বাচন কর্মীদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছেন। সেখানে AERO (Assistant Electoral Registration Officer), BLO (Booth Level Officer) এবং সুপারভাইজারদের অংশগ্রহণ ছিল। প্রশিক্ষণে বিশেষ ও নিবিড় সমীক্ষা সংক্রান্ত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

জানা গিয়েছে, কমিশনের তরফে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নির্বাচন দফতরকে আরও ‘স্বাধীন’ করার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে আন্দাজ করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই বাংলাতেও শুরু হতে পারে ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া।

শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি ও রাজনৈতিক বার্তা

এই আবহে শনিবারের প্রশিক্ষণ পর্বের কথা সামনে আসতেই ফের মুখ খুললেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্য, “বিহারে যদি ৫০ লক্ষ নাম বাদ যায়, বাংলায় তা হলে ১ কোটি ২৫ লক্ষ রোহিঙ্গা, মুসলিম, বাংলাদেশির নাম বাদ যাবে।” তাঁর এই বক্তব্য শুধু সংখ্যাতত্ত্বে সীমাবদ্ধ নয়, বরং রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট।

তাঁর কথায়, “তবে সব ভারতীয় হিন্দু-মুসলিম ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে আসা হিন্দুদের আমি আশ্বস্ত করছি—কাউকে কোনও অসুবিধা হলে উপরে মোদীজি বড় গ্যারান্টর, আর এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ছোট গ্যারান্টর।”

Advertisements

শুভেন্দু এ-ও জানান, ১৫ আগস্টের পর তিনি রাজপথে নামবেন। তাঁর সাফ বক্তব্য, “আমরা রোহিঙ্গা-মুক্ত বাংলা চাই।” এর আগেও একাধিকবার তিনি বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মুখ খুলেছেন। তবে এবার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে এবং বিহার প্রসঙ্গ টেনে যে ভাবে মন্তব্য করলেন, তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

গেরুয়া শিবিরে উৎসাহ, বিরোধীদের প্রশ্ন

এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব শুভেন্দুর বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। তাঁদের মতে, রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে এবং তা ভোটার তালিকাতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের যদি নিরপেক্ষ ও সতর্ক সমীক্ষা হয়, তবে প্রকৃত চিত্র সামনে আসবে।

অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলির একাংশ বলছে, “শুভেন্দু অধিকারী বারবার বিভাজনের রাজনীতি করছেন। রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি বলে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ফারাক টেনে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন।”

তবে একথা অনস্বীকার্য, কমিশনের পদক্ষেপ এবং শুভেন্দুর মন্তব্য—এই দুইয়ের মিলনে বাংলার ভোট রাজনীতিতে এখন থেকেই ঝাঁঝ বাড়ছে। এখন দেখার, আদৌ বাংলায় ভোটার তালিকা নিয়ে বড়সড় সমীক্ষা শুরু হয় কি না, আর হলে তার প্রতিক্রিয়া কতটা বিস্তৃত হয়।