HomeWest BengalKolkata Cityবিদেশি ডিগ্রি বিতর্কে ২ বছর সাসপেন্ড, হাইকোর্টে শান্তনু সেন

বিদেশি ডিগ্রি বিতর্কে ২ বছর সাসপেন্ড, হাইকোর্টে শান্তনু সেন

- Advertisement -

কলকাতা: চিকিৎসক এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনের (Shantanu Sen) উপর বড় প্রশাসনিক কোপ। ‘এফআরসিপি গ্লাসগো’ (FRCP Glasgow) নামক বিদেশি ডিগ্রি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন না করিয়েই ব্যবহার করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ২ বছরের জন্য তাঁর ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল (WBMC)। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

শুক্রবার তিনি (Shantanu Sen) হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। জানা গেছে, আগামী সোমবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।

   

ঘটনার সূত্রপাত একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে। শান্তনু সেন (Shantanu Sen) রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে তাঁর রেজিস্ট্রেশন না করিয়েই বিদেশি একটি ডিগ্রি, ‘FRCP Glasgow’ ব্যবহার করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই কারণে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে জবাব চায়। বৃহস্পতিবার সেই তলব পেয়ে WBMC-এর সামনে হাজির হন শান্তনু সেন। কিন্তু তাঁর জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি মেডিক্যাল কাউন্সিল। এরপরই তাঁর রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ডাঃ সুদীপ্ত রায় জানিয়েছেন, “নথিপত্র খতিয়ে দেখেই বোঝা গেছে, রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহার করেছেন শান্তনু সেন। তাই চিকিৎসা নীতির পরিপন্থী কাজ করায় তাঁর রেজিস্ট্রেশন ২ বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে।” এর অর্থ, আগামী দু’বছর তিনি কোনও রোগী দেখতে পারবেন না, চিকিৎসা করতে পারবেন না।

ঘটনার পরেই রাজনৈতিক মহলেও চাঞ্চল্য ছড়ায়। তৃণমূলেরই এক চিকিৎসক নেতা ডাঃ নির্মল মাজি এই বিষয়ে বলেন, “শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত একদম ঠিক হয়েছে। আইন সবার জন্য এক।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেও চর্চা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, শান্তনু সেন নিজে দাবি করেছেন, তাঁর ডিগ্রি সম্পূর্ণ বৈধ এবং তিনি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছিলেন অনেক আগেই। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য জানার জন্য আরটিআই করেছিলেন, কিন্তু কোনও উত্তর পাননি। তাঁর কথায়, “আমার রেডিওলজির যোগ্যতা রয়েছে। যদি অন্যায় করতাম, আমি আমার অজ্ঞতা স্বীকার করে মাথা নিচু করে নিতাম। কিন্তু আমি কিছুই গোপন করিনি।”

শান্তনু সেনের মতে, এটা তাঁকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। তাই তিনি এবার হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন। হাইকোর্ট রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে নাকি বাতিল করে, সেটাই এখন দেখার।

এই ঘটনা রাজ্যের চিকিৎসা প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহলে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে। চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ নিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত – এই বার্তা স্পষ্ট হলেও, কোনও রাজনৈতিক প্রভাব পড়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শান্তনু সেনের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া প্রমাণ করে, তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করছেন। আদালতের রায়েই এবার ভবিষ্যতের দিশা নির্ধারিত হবে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular