নন্দীগ্রাম আবারও রাজনৈতিক উত্তাপের কেন্দ্রে। শহিদ দিবস উপলক্ষে দু’টি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, যার একটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি, অন্যটিতে বিজেপির। মঞ্চ দু’টির মধ্যে মাত্র কয়েক হাতের ব্যবধান। এমন দৃশ্যকে অনেকে প্রশ্ন করেছেন—এটা কি সৌজন্য, নাকি রাজনৈতিক যুদ্ধের এক নতুন রূপ? স্থানীয়রা বলছেন, ২০২০ সালের পর থেকে প্রতি বছর এমন দৃশ্য দেখা যায়। দু’টি প্রধান রাজনৈতিক দল, তৃণমূল এবং বিজেপি, শহিদ বেদীতে প্রথম পৌঁছানোর প্রতিযোগিতা চালায়। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর এই টানাপোড়েন আরও চোখে পড়ার মতো। কে আগে শহিদ বেদীতে পৌঁছাবে—এটাই যেন দুই দলের মূল লড়াই।
এই দু’টি মঞ্চও সেই প্রতিযোগিতারই একটি অংশ। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয় যে দুই দল পাশাপাশি স্লোগান তুললেও কোনও বিবাদ না হয়। তাই প্রতিবারই কর্মসূচির জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এই সময়ে তিনি শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং সেখানে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। শুভেন্দুর কর্মসূ (Suvendu Adhikari) চি শেষ হবার পরই শুরু হবে তৃণমূলের কার্যক্রম। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি দেখভাল করবেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
২০২০ সালের আগে এই দিনটি বামপন্থি সরকারের ‘অপারেশন সূর্যোদয়’-এর অংশ হিসেবে পালন করা হতো। শহিদ দিবসের গুরুত্ব কিন্তু আজও অপরিবর্তিত। শহিদ বেদীতে বিনম্র শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই অনুষ্ঠানে একটি বিশেষ রঙ যোগ করেছে।এদিন শুভেন্দু অধিকারী মাল্যদান করার পর বলেন, ‘আসল পরিবর্তন ২০১১ সালে হয়নি। আমরা ভুল করেছি। জনগণকে নিয়ে আমরাই আসল পরিবর্তন আনব।’
দুই দলের মধ্যে এই ধরনের প্রতিযোগিতা শুধু শহিদ দিবসেই নয়, বরং নন্দীগ্রামের রাজনীতির একটি নিয়মিত ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কে আগে পৌঁছাবে, কার বক্তব্য বেশি প্রভাব ফেলবে—এই প্রতিটি কদমে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ে। তবে প্রশাসন নিশ্চিত করে যে, উভয় দলের কর্মসূচি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়।
সংক্ষেপে, নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান কেবল শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জায়গা নয়, এটি রাজনৈতিক কৌশল ও প্রতিযোগিতার এক শক্তিশালী মঞ্চ। পাশাপাশি দু’টি মঞ্চ, নির্ধারিত সময় এবং প্রশাসনের তৎপরতা—এই সব মিলিয়ে একটি উত্তেজনাপূর্ণ, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।


