কলকাতা: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের (BJP Bengal campaign) আগে সংগঠনকে আরও ধারালো করতে মাঠে নেমে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্তরের বৈঠক, কোর কমিটির আলোচনা এবং নানা সাংগঠনিক সাজগোজ। শুক্রবারের বৈঠকের পর দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হয়, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাংলায় প্রচারে নামতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাদের সফরকে কেন্দ্র করে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে উত্তেজনা তুঙ্গে।
সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে বাংলায় আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে উঠে এসেছে হুগলির আরামবাগ। ইতিমধ্যেই ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর এই দুই দিনের যেকোনও একদিন জনসভা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সপ্তাহান্ত হওয়ায় ওই দিনগুলি সবচেয়ে কার্যকর হবে বলে মনে করছেন নেতারা।
তবে একইসঙ্গে রয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। ১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অধিবেশন চলবে, ফলে প্রধানমন্ত্রীর বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য ধারাবাহিক সফর করা কঠিন। প্রথমে এ নিয়ে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। কিন্তু দলীয় সূত্রে খবর, অধিবেশনের মাঝেই সপ্তাহান্তে সফর করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাই ১৩ বা ১৪ ডিসেম্বরের মোদীর সভার সম্ভাবনা বাস্তব বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর মধ্যে রাজ্য বিজেপির সংগঠনে আসছে বড় পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা নতুন রাজ্য কমিটি ডিসেম্বরেই ঘোষণা হতে পারে বলে ইঙ্গিত শোনা যাচ্ছে। নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পরই রাজ্যের সাংগঠনিক রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হয়েছে। ভোটের আগে শক্তিশালী টিম তৈরি করাই এখন লক্ষ্য।
অন্যদিকে ১৯ ডিসেম্বরের পর কলকাতায় আসতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে রাজ্য কমিটির বর্ধিত বৈঠক। সেখানে নতুন কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব বণ্টন, ভোটের রণকৌশল, বুথ পর্যায়ের রিপোর্ট সবকিছু নিয়েই হবে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। ২০২১-এর পরাজয়ের ভুলগুলি শুধরিয়ে ২০২৬-এর লড়াইয়ে কোনও শিথিলতা রাখতে চাইছে না বিজেপি।
ইতিমধ্যেই আরামবাগে মোদীর সম্ভাব্য সভা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। এখন অপেক্ষা PMO-র সবুজ সংকেত। মোদির পূর্ববর্তী বাংলার সভাগুলিতে বিরাট জনসমাগম হয়েছিল যেমন বালুরঘাট, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর। তাই আরামবাগেও একই ধরনের চিত্র দেখা যাবে বলেই আশাবাদী গেরুয়া শিবির।
ডিসেম্বরের শুরুতেই রাজ্যের রাজনৈতিক আবহাওয়া গরম হয়ে উঠতে চলেছে। মোদী ও শাহ দু’জনের সফরকে কেন্দ্র করে নতুন উদ্যমে প্রচারে নামবে বিজেপি। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতেই এবার গোড়া থেকে সংগঠন চাঙ্গা করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির।
