কলকাতা এয়ারপোর্ট মেট্রো চালু, লাগেজ নিয়ে নতুন নিয়ম কী জানাল কর্তৃপক্ষ

Kolkata Metro Update: Major 19 Km Extension Planned by December 2026

সোমবার থেকে কলকাতার যাত্রীদের জন্য খুলে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রো (Noapara–Airport Metro) রুট। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে সোমবার থেকে যাত্রী পরিষেবা শুরু হচ্ছে এই নতুন মেট্রো পথে। ফলে শহরবাসীর যাতায়াতের সুবিধা এক ধাপ এগোচ্ছে, বিশেষ করে বিমানবন্দরে যাতায়াত আরও দ্রুত ও সাশ্রয়ী হবে। তবে যাত্রীদের মনে ইতিমধ্যেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন—বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা মেট্রোতে তাঁদের ভারী লাগেজ কীভাবে বহন করবেন? লাগেজের জন্য কি আলাদা চার্জ দিতে হবে?

Advertisements

কলকাতা মেট্রো সূত্রে খবর, বর্তমানে লাগেজ সংক্রান্ত যে নিয়ম কার্যকর রয়েছে, সেটাই আপাতত চলবে। অর্থাৎ ১০ কেজির বেশি ওজনের জিনিস মেট্রোতে বহন করার অনুমতি নেই। সেই সঙ্গে যেসব জিনিস সহযাত্রীদের সমস্যার কারণ বা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সেগুলি বহনেরও অনুমতি নেই। মেট্রো রেল আধিকারিকদের মতে, নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর রুট চালু হলেও আলাদা করে লাগেজ রাখার ব্যবস্থা বা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই এখনই।

   

বিমানযাত্রীরা সাধারণত কেবিন লাগেজ ও চেক-ইন লাগেজ নিয়ে চলাচল করেন। বেশির ভাগ ডোমেস্টিক ফ্লাইটে চেক-ইন লাগেজ হিসেবে অনুমতি থাকে ১৫ কেজি পর্যন্ত স্যুটকেসের। কেবিন লাগেজের ওজনসীমা সাধারণত ৭ কেজি। অর্থাৎ একজন বিমানযাত্রীর লাগেজ সাধারণ মেট্রো যাত্রীর তুলনায় অনেক বেশি ভারী হয়ে থাকে। তবে মেট্রোর যাত্রী সুরক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ কোনও নতুন নিয়ম চালু না করেই আগের নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করবে।

মেট্রো রেল দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “যাত্রীদের যেন যাতায়াতে অসুবিধা না হয়, সেটাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। আলাদা লাগেজ কোচ চালু করা বা লাগেজ ফি আরোপ করার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই।” যাত্রীরা যে নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের জন্যও কোনও পরিবর্তন আনতে চাইছে না মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

এদিকে শহরের মেট্রো রেল পরিষেবা ইতিমধ্যেই ব্লু লাইন, গ্রিন লাইন, ইয়েলো লাইনসহ একাধিক রুটে বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু কোথাও লাগেজ সংক্রান্ত বিশেষ কোনও আলাদা ব্যবস্থা নেই। নতুন এই এয়ারপোর্ট লাইনও একই নিয়মে চলবে। ফলে, ভারী লাগেজ নিয়ে যাত্রীদের এখনই অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে কি না, সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা মেলেনি।

Advertisements

তবে যাত্রীরা যদি নির্ধারিত ১০ কেজির সীমার বেশি ওজনের লাগেজ নিয়ে মেট্রোতে ওঠেন, তা হলে নিয়ম লঙ্ঘন হবে। কলকাতা মেট্রোর জনসংযোগ দফতর জানিয়েছে, “যে লাগেজ রুল আগে থেকে কার্যকর আছে, সেটাই চালু থাকবে। নতুন কোনও চার্জ বা লাগেজ কোচের পরিকল্পনা আপাতত নেই।”

যদিও নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর রুট চালু হওয়ার ফলে অনেক বিমানযাত্রী মেট্রো ব্যবহার করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, তবে ব্যস্ত সময়ে ভারী লাগেজ নিয়ে ওঠানামার চাপ সামলাতে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে যাত্রীদের। বিমানযাত্রীরা আগেভাগে পরিকল্পনা করে মেট্রো ব্যবহার করলে ভিড় কমানো এবং যাতায়াতের সুবিধা বজায় রাখা সম্ভব হবে।

নতুন এই রুট চালু হওয়ার পর বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় সাশ্রয় হবে প্রায় অর্ধেক। যাত্রীদের নিরাপত্তা, আরাম এবং দ্রুত পরিষেবা নিশ্চিত করতে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই স্টেশনগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে।

কলকাতা শহরের যাতায়াত ব্যবস্থায় এয়ারপোর্ট মেট্রো রুট নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে লাগেজ সংক্রান্ত প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট সমাধান আসতে সময় লাগতে পারে। তাই আপাতত যাত্রীদের ১০ কেজি ওজন সীমার নিয়ম মেনেই মেট্রো ব্যবহার করতে হবে।