“Big Jump” ঘোষণা মমতার, সংস্কৃতিতে নতুন দিশা বাংলা

কলকাতা: কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (Kolkata International Film Festival 2025) শেষ দিনে চমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে থেকে নির্ধারিত সূচি না থাকলেও, বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ করেই হাজির হন নজরুল মঞ্চে। উপস্থিত শিল্পী, পরিচালক, অভিনেতা, অতিথি এবং দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,“আমার আজকে এখানে আসার কথা ছিল না, আমি সারপ্রাইজ ভিজিট করতে এসেছি। আমার মনে হল যারা পুরস্কার পাচ্ছেন তাঁদের একবার দেখে আসি।”

Advertisements

মঞ্চে বক্তৃতার সময় মুখ্যমন্ত্রী বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যের কথা তুলে ধরে বলেন, “হলিউড বিখ্যাত, বলিউডও বিখ্যাত, কিন্তু বাংলা হল দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী ‘Bengal is the Cultural Capital of India’। বাংলার সংস্কৃতি মানে একতা, ভালোবাসা ও বৈচিত্র্য। আমরা কলকাতাবাসী অতিথিদের ভালোবাসি, তাঁদের সম্মান করি এবং আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি রাখি না।”

   

তিনি আরও বলেন, এই চলচ্চিত্র উৎসব এখন আর কেবলমাত্র সিনেমাপ্রেমীদের জন্য নয়, এটি এখন “জনগণের উৎসব”। মানুষের অংশগ্রহণ, সঙ্গীত, আড্ডা এবং শিল্পের মেলবন্ধনেই এই উৎসব আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।

এদিন পরিচালক গৌতম ঘোষ-কে দেওয়া হয় চলচ্চিত্র উৎসবের লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। পুরস্কার হাতে নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন তিনি। প্রয়াত স্ত্রী নীলাঞ্জনাকে স্মরণ করে বলেন, “যিনি আমার জীবনের প্রতিটি কাজের নেপথ্যে ছিলেন, আজ তাঁকেই প্রথমে স্মরণ করছি।”

পরিচালক আরও জানান, এই বছরের চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শকদের অংশগ্রহণ ছিল নজরকাড়া। দেশ-বিদেশের ভালো ভালো ছবি এবং সিনে আড্ডায় সঙ্গীত ও আলাপচারিতা এই উৎসবকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে।

Advertisements

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যদি মানবিক ছোঁয়া না থাকে কোনও কাজে, তাহলে শুধু রোবোটিক টাচ দিয়ে কিছু হয় না।” তাঁর মতে, সংস্কৃতি ও সিনেমার মূল আত্মা মানবিকতা এবং সহানুভূতি। তাই উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার আহ্বান জানান তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, “আমরা আগামী বছর আরও বড় কিছু করব… Big Jump!” আগামী বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে আরও আন্তর্জাতিক মানে, বৃহত্তর আকারে এবং আরও জনসংযুক্তভাবে আয়োজন করা হবে।

তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ ও উদ্দীপনা দেখে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আমি দুদিন আগে হঠাৎ এসে দেখেছি, ইয়ং ছেলেমেয়েরা খুব এনজয় করছে চলচ্চিত্র উৎসব। এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে।”

চলচ্চিত্র উৎসবের এই সারপ্রাইজ উপস্থিতি এবং বড় ঘোষণা রাজ্যের সংস্কৃতি জগতে নতুন উদ্দীপনা যোগ করেছে। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব এখন কেবল সিনেমা প্রদর্শনের উৎসব নয়, এটি বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐক্য এবং সৃষ্টিশীলতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এই উৎসব শুধু সিনেমার নয়, এটা মানুষের হৃদয়ের উৎসব।”