‘বাঙালির অধিকার রক্ষায় এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না’, মদনের হুঁশিয়ারি

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে (Madan Mitra) গত কয়েকদিন ধরে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত। এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সরব হয়েছেন…

Madan Mitra Slams BJP Over Alleged Bengali Harassment, Issues Strong Warning

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে (Madan Mitra) গত কয়েকদিন ধরে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত। এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সরব হয়েছেন এবং নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করেছেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘বাঙালির গায়ে হাত পড়লে(Madan Mitra) বিজেপির হাতের কবজি কেটে নেবে তৃণমূল কর্মীরা’’। তাঁর এই হুঁশিয়ারি, যা তাঁর দলের মধ্যে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধের সঙ্কেত হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের আরও আক্রমণাত্মক অবস্থানকে তুলে ধরেছে(Madan Mitra) 

Advertisements

মদন মিত্র এই মন্তব্য করেন শনিবার বেলঘরিয়ায় এক অনুষ্ঠানে, যেখানে একুশে জুলাইয়ের (Madan Mitra) প্রস্তুতি সভা চলছিল। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বাঙালি কবিতা লিখতে পারে। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন বাঙালি প্রতিবাদ করতে পারে না, তাহলে জেনে রাখুন, যেদিন একটা বাঙালির গায়ে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে হাত পড়বে, সেই দিন বিজেপির হাতের মুঠো কীভাবে ভেঙে দিতে হয় তার জন্য তৃণমূলের কর্মীরা তৈরি।’’ মদনের এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে এক নতুন সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে বাঙালির স্বত্বাধিকার এবং সম্মান রক্ষা করা হবে প্রধান উদ্দেশ্য।(Madan Mitra) 

Advertisements

মদন মিত্র আরও বলেন, ‘‘যারা গাড়ি চালান, রুটি বেচে খায়, তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু যদি তাদের উপর হাত পড়ে, তৃণমূলের বাঙালি যুব কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়বে। তবে, যদি বাঙালির গায়ে হাত দেওয়া হয়, তৃণমূল তাদের হাতের কবজি কেটে নেবে।’’ এই বক্তব্যটির মাধ্যমে মদন মিত্র একদিকে যেমন তৃণমূল কর্মীদের একটি সংকল্পিত অবস্থান তুলে ধরেছেন, তেমনি অন্যদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে এক দৃঢ় হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন।(Madan Mitra) 

মদনের এই মন্তব্যের পর, বিজেপি পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। কামারহাটির বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং মদন মিত্রের হুমকির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মদন মিত্র বলেছে, ‘বিজেপির হাতের কবজি কেটে দেবো’। কিন্তু আমি তাকে জানিয়ে দিতে চাই, মদন মিত্র আজ যা বলছেন, কাল সে নিজের অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকবে না। কামারহাটির বাবু মণ্ডলই মদন মিত্রকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে। সে তো নিজে জেল থেকে বের করতে পারেনি, কীভাবে বিজেপির হাত কাটবে?’’ অর্জুন সিংয়ের এই বক্তব্য তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর আরও একটি বড় উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয় পক্ষই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাঙালি আবেগকে শান দেওয়ার জন্য নিজেদের রাজনীতি সাজাচ্ছে। যেখানে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্গাপুরের সভা থেকে বাঙালির অস্মিতা রক্ষার কথা বলছেন, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সমিরুল ইসলাম বাংলার বাইরের রাজ্যগুলোতে বাঙালির ওপর নির্যাতনের নানা ভিডিও পোস্ট করে জনমনে উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন।

মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে বাঙালিদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে অত্যাচার করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে সমিরুল ইসলাম তৃণমূলের জাতীয় ইস্যু হিসেবে এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন। মদন মিত্রের হুঁশিয়ারি ও সমিরুল ইসলামের ভিডিওগুলি মিলে বিজেপি-বাঙালি বিতর্কের মধ্যে নতুন একটি মাত্রা যোগ করেছে।

এই সংঘর্ষের পটভূমিতে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দু’পক্ষই নিজের শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোট ব্যাংক লাভের চেষ্টা করবে। বিজেপি বাঙালি জনগণের মধ্যে তার শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছে, যেখানে তারা বাঙালির অহংকার এবং সংস্কৃতির সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসও এই বাঙালি আবেগকে কাজে লাগাতে চায়, এবং মদনের হুঁশিয়ারি সেই প্রতিশ্রুতি এবং শক্তি প্রদর্শনেরই একটি অংশ।

রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তা পরবর্তী সময়ে আরও জটিল হতে পারে, কারণ তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়েরই এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন দেখতে হবে, এই উত্তেজনা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কীভাবে প্রভাব ফেলবে এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী আবেগ কতটা নির্বাচনী সাফল্য আনতে পারে।