কলকাতা: আকাশে নিম্নচাপের ছায়া, তার সঙ্গে বাজারে চড়া দাম — দুইয়ে মিলে মধ্যবিত্তের মুখে হাঁ। শরতের শেষ প্রান্তে যখন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর, ঠিক তখনই রাজ্যের সবজির বাজারে আগুন লেগেছে। বিক্রেতারা বলছেন, লাগাতার বৃষ্টির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত, আর ক্রেতারা বলছেন, রোজকার রান্না এখন প্রায় বিলাসিতা।
বুধবার সকালেই শ্যামবাজার, গড়িয়া, বেহালা থেকে শুরু করে নিউ মার্কেটের সবজির দোকানগুলিতে ভিড় ছিল স্বাভাবিক। তবে প্রতিটি দোকানের দামতালিকায় চমক! পেঁয়াজের দাম যেন ফের একবার চোখ কপালে তোলার মতো। বড় পেঁয়াজের দাম এখন ₹২৩–₹২৯ প্রতি কেজি, আর ছোট পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে উঠেছে ₹৪৭ থেকে ₹৬০ পর্যন্ত। টমেটোর দাম ₹২২ থেকে ₹২৮, সবুজ লঙ্কা ₹৪৬ থেকে ₹৫৮, আর বিটরুট ₹৩৪ থেকে ₹৪৩ প্রতি কেজি।
টিকিটের ব্যবস্থা সুপার কাপের ডার্বিতে, কাদের জন্য কোন স্ট্যান্ড?
আলুর দামেও বৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো ₹২৮ থেকে ₹৩৬ প্রতি কেজি, যা সাধারণত অক্টোবরের শেষে এই হারে ওঠে না। বাজার সূত্রে জানা গেছে, লাগাতার বৃষ্টিতে হুগলি, নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমানের পাইকারি বাজারে পরিবহন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে খুচরো বাজারে পণ্য পৌঁছতে দেরি হচ্ছে, আর তার প্রভাব পড়ছে দামে।
কলকাতার এক সবজি বিক্রেতা দেবাশিস সরকার জানান, “প্রতিদিনই ট্রাক কম আসছে। পণ্য নষ্ট হচ্ছে ভিজে যাওয়ার কারণে। তাই দাম বেড়েছে। যতদিন বৃষ্টি আছে, দামও থাকবে উঁচুতে।” শুধু পেঁয়াজ বা আলু নয়, এই সপ্তাহে করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, লাউ, ফুলকপি ও বাঁধাকপির মতো সবজির দামও উর্ধ্বমুখী। করলার দাম ₹৩৭ থেকে ₹৪৭, ঢেঁড়স ₹৪১ থেকে ₹৫২, ফুলকপি ₹৩২ থেকে ₹৪১, বাঁধাকপি ₹২৯ থেকে ₹৩৭, বেগুন ₹৩৯ থেকে ₹৫০ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, পাতাযুক্ত সবজি যেমন পুঁইশাক, লালশাক, ধনে পাতা ও কারি পাতা — এগুলির দামেও বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। ধনে পাতার দাম এখন ₹১৫ থেকে ₹১৯ প্রতি ১০০ গ্রাম, পুঁইশাক ₹১৩ থেকে ₹১৭, কারি পাতা ₹৩০ থেকে ₹৩৮ প্রতি গুচ্ছ। মৌসুমি ফল ও অন্যান্য সবজিতেও পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। কলা ফুল ₹২০ থেকে ₹২৫, ভুট্টা ₹৩২ থেকে ₹৪১, কুমড়ো ₹২৪ থেকে ₹৩০, আর ঢেঁকিশাক ও কলোকাসিয়া পাতার দামও বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান নিম্নচাপের প্রভাবে যদি আগামী ৩–৪ দিন ধরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকে, তবে দাম আরও বাড়তে পারে। শহরে বিক্রেতারা এখন “প্রতিদিনের সরবরাহের উপর নির্ভরশীল”, কারণ পাইকারি ভলিউম অনেকটাই কমে গিয়েছে।



