কলকাতা: দীপাবলির রেশ কাটতে না কাটতেই ফের চড়ছে বাজারদর। সপ্তাহের শেষে কলকাতাসহ গোটা রাজ্যে সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। পাইকারি ও খুচরো বাজার দুই জায়গাতেই দাম বেড়েছে বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির, ফলে গৃহস্থের পকেটে চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
শনিবার সকালে শ্যামবাজার, গড়িয়া, কেশবচন্দ্র বাজার, নিউ আলিপুর ও বাঘাযতিন বাজার ঘুরে দেখা গেল পেঁয়াজ, টমেটো, ক্যাপসিকাম থেকে শুরু করে ঢ্যাঁড়শ, বেগুন, লাউ প্রায় সবজিতেই দাম লাফিয়ে উঠেছে।
চেন্নাইয়িন শিবিরে যোগদান করলেন রাজ বাস্ফোর
বাজারদর অনুযায়ী, বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ₹২৫ থেকে ₹৪১-এ, ছোট পেঁয়াজের দাম ₹৪৯ থেকে ₹৮১ পর্যন্ত। টমেটোর দাম ₹২০ থেকে ₹৩৩ প্রতি কেজি, সবুজ লঙ্কা ₹৪৮ থেকে ₹৭৯, গাজর ₹৪০ থেকে ₹৬৬, বাঁধাকপি ₹২৭ থেকে ₹৪৫ কেজি। আলু ₹২৪ থেকে ₹৪০, বেগুন ₹৩৮ থেকে ₹৬২, ঢ্যাঁড়শ ₹৩৫ থেকে ₹৬০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য সবজির মধ্যে বিটরুট ₹৩১ থেকে ₹৫১, কাঁচা কলা ₹১২ থেকে ₹২০, লাল শাক ₹১৫ থেকে ₹২৫, আমলকি ₹৭৫ থেকে ₹১২৪, চাষকুমড়ো ₹২০ থেকে ₹৩৩, বেবিকর্ন ₹৫০ থেকে ₹৮৩, মোচা কলাফুল ₹১৬ থেকে ₹২৬, ক্যাপসিকাম ₹৪১ থেকে ₹৬৮, করলা ₹৩৯ থেকে ₹৬৪, লাউ ₹২৮ থেকে ₹৪৬, সিম ₹৩৭ থেকে ₹৬১, বাঁধাকপি ₹২৭ থেকে ₹৪৫, গাজর ₹৪০ থেকে ₹৬৬ এবং ফুলকপি ₹৩১ থেকে ₹৫১ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ব্যবসায়ীদের মতে, সাম্প্রতিক উৎসবের চাহিদা, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং রাজ্যের বাইরে থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক থেকে পেঁয়াজের লরি বিলম্বে পৌঁছচ্ছে, ফলে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দামে স্থিতিশীলতা আসছে না। এক ব্যবসায়ী বলেন, “বৃষ্টি ও পরিবহন সংকটের জন্য সরবরাহ কম, কিন্তু চাহিদা প্রচুর। ফলে দামে স্বাভাবিকভাবেই আগুন।”
অন্যদিকে গৃহস্থদের মুখে চিন্তার রেখা। এক ক্রেতা বললেন, “রোজকার রান্নার সবজিতেই এখন হাত পোড়ার জোগাড়। সপ্তাহে তিন-চারশো টাকার সবজি এখন সাতশো-আটশো ছুঁইছে। মাঝারি আয়ের মানুষ এখন বাজারে গিয়ে হাঁসফাঁস খাচ্ছেন।”
আবহাওয়াজনিত প্রভাব ও সরবরাহ ঘাটতি কিছুটা স্থায়ী হলে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাঁদের মতে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নতুন ফসল বাজারে এলে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত সবজির দাম উচ্চস্তরেই থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এই অবস্থায় গৃহস্থ থেকে ব্যবসায়ী সকলেরই একটাই আশা, “নতুন ফসল যেন তাড়াতাড়ি বাজারে আসে।”


