বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা: টানা প্রবল বর্ষণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে কলকাতা। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিতে একাধিক রাস্তায় কোমর সমান জল জমেছে। যান চলাচল বন্ধ,…

কলকাতা: টানা প্রবল বর্ষণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে কলকাতা। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিতে একাধিক রাস্তায় কোমর সমান জল জমেছে। যান চলাচল বন্ধ, নিত্যযাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে। কোথাও গাছ উপড়ে পড়েছে, কোথাও আবার বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শহর ও শহরতলিতে ইতিমধ্যেই ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

Advertisements

এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, মঙ্গলবার থেকেই সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে দুর্গাপুজোর আগাম ছুটি শুরু হবে। ICSE ও CBSE বোর্ডের স্কুলগুলোকেও একই পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও অনলাইন ক্লাস চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়, শহরের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছেও আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর আর্জি, অন্তত আগামী ২ দিন যেন ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু রাখা হয়। কারণ, জল নামতে সময় লাগবে, ফলে পরিস্থিতি আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা স্বাভাবিক হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাছাড়া, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত অচল। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ, বহু লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দমদম থেকে ট্রেন চললেও তা অতি ধীরগতিতে। ময়দান থেকে ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। রাস্তা জুড়ে জল জমায় অটো, ট্যাক্সি, বাস—সবই প্রায় বন্ধ। হাতে গোনা কয়েকটি বাস চললেও তাতে উপচে পড়া ভিড়।

প্রবল বৃষ্টিতে শহরের একাধিক জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে জলে পড়ে রয়েছে। এর জেরেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছেন—“খুব দরকার না থাকলে কেউ বাড়ি থেকে বেরবেন না।”

দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা উদ্ধারকাজে নেমেছেন। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি—প্রায় সর্বত্র একই পরিস্থিতি।

কলকাতার জলমগ্ন ছবি ও ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। জনজীবন স্বাভাবিক করতে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালালেও শহরবাসীর দুর্দশা যেন শেষ হওয়ার নামই নিচ্ছে না। অফিস–কাছারি, স্কুল–কলেজ, ট্রেন–মেট্রো—সব ক্ষেত্রেই কার্যত অচলাবস্থা। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘সবাই ধৈর্য ধরে ঘরে থাকুন, সতর্ক থাকুন।’’