আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে শুক্রবার সকালে ঘটে গেল বড়সড় অগ্নিকাণ্ড (Kolkata Fire) । সাধারণ দিনের মতোই দোকানপাট ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছিল, তখনই হঠাৎ দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে একাধিক দোকান ও গোডাউনে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে যায় রাস্তাঘাট। এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীরা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন। আগুনের তীব্রতা দেখে স্থানীয়রা প্রথমে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু কিছুতেই আগুনের লাগাম টানা যায়নি।
ঘটনার খবর পেয়ে দমকলের দুটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করে। দমকল কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তবে দোকান ও গোডাউনের ভেতরে দাহ্যবস্তু থাকায় আগুন আরও ভয়াবহ রূপ নিতে শুরু করে। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে দমকলকে বাড়তি সতর্কতা নিয়ে কাজ করতে হয়।
আগুন লেগে যাওয়ার জায়গার পাশেই রয়েছে ঘনবসতির এলাকা। বাড়িঘর, ছোট দোকান, গুদাম ও সংকীর্ণ লেন—সব মিলিয়ে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল প্রবল। দমকল সেই দিকেই বিশেষ নজর রেখে কাজ চালায়। ঘনবসতির দিকে আগুন যাতে এগিয়ে যেতে না পারে, সেদিকে জোর দেওয়া হয়। স্থানীয়দের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজনকে ঘর থেকে বের করে এনে রাস্তায় এবং খোলা জায়গায় আশ্রয় নিতে দেখা যায়। আতঙ্কের কারণে বাচ্চা-বুড়ো সকলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
এলাকায় থাকা একটি প্লাস্টিকের গোডাউন থেকেও আগুনের শিখা আরও উঁচুতে উঠতে থাকে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক দোকান মালিক বলেন, “হঠাৎই দেখি ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সবকিছু আগুনে পুড়তে শুরু করে। আমরা কিছুই বাঁচাতে পারিনি।” দোকানে থাকা মালামাল, প্লাস্টিক সামগ্রী, স্টেশনারি, গৃহস্থালির জিনিসপত্র—সবই মুহূর্তে ছাই হয়ে যায়।
দমকলের কর্মকর্তারা প্রাথমিক অনুমান করেছেন যে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে। সকালে বাজার খোলার সময় বিভিন্ন দোকানে বৈদ্যুতিক লোড বৃদ্ধি পায়, যার ফলে অনেক সময়েই শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লাগে। গুলশন কলোনির পুরনো তার, খোলা সংযোগ এবং অনিরাপদ ইলেকট্রিক বোর্ডগুলিই বড় বিপদের কারণ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
