কলকাতা: শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় ফের বড় বিপত্তি। বুধবার দুপুরে কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro) ব্লু লাইনে পরিষেবা ব্যাহত হয়, এম.জি. রোড স্টেশনের কাছাকাছি রেললাইনে ফাটল ধরা পড়ায়। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট নাগাদ এই ত্রুটির খবর পাওয়া যায়, যার ফলে ময়দান থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়।
ঘটনাটি শুরু হয় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ, যখন একটি মেট্রো ট্রেন ময়দান স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে। সিগন্যাল না মেলায় চালক ট্রেন চালাতে পারেননি। যাত্রীরা প্রথমে বিভ্রান্ত হন, পরে ঘোষণা শোনা যায়—“প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে পরিষেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে।” এরপর অনেকেই ট্রেন থেকে নেমে বিকল্প পরিবহন খোঁজেন, আবার কেউ অপেক্ষা করতে থাকেন।
কিছুক্ষণ পর ট্রেনটি চাঁদনি চক পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি পায়। সেখানে পৌঁছানোর পরই ঘোষণা করা হয় যে উভয় দিকেই পরিষেবা আপাতত বন্ধ থাকবে এবং সমস্ত যাত্রীকে নেমে যেতে অনুরোধ করা হয়। পরিষেবা পাওয়া যাবে দক্ষিণেশ্বর থেকে দমদম ও ময়দান থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম।
এই আকস্মিক পরিষেবা বন্ধে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অফিসগামী কর্মীরা, স্কুল ও কলেজের পড়ুয়ারা সবাই হঠাৎই বিকল্প পরিবহনের খোঁজে ছুটতে থাকেন। রাস্তায় বাড়তি ভিড় দেখা যায় বাস ও ট্যাক্সিতে।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মোবাইল অ্যাপ “আমার মেট্রো কলকাতা”-তে জানানো হয়েছে, “অপরিহার্য কারণে ব্লু লাইনে আংশিক পরিষেবা চালু রয়েছে। বর্তমানে ময়দান থেকে সাহিদ খুদিরাম পর্যন্ত এবং দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো চলবে। অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।”
মেট্রোর প্রকৌশল বিভাগের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাটল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত চাপ বা তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে ট্র্যাকে ফাটল দেখা দিতে পারে। আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মেরামতির কাজ চলছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র।
নিত্যযাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এক অফিসযাত্রী বলেন, “প্রতিদিন সময়মতো কাজে যেতে মেট্রোই ভরসা। এমন হঠাৎ সমস্যায় পড়ে বিপাকে পড়েছি।” মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “যাত্রীদের নিরাপত্তাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। সামান্য ত্রুটি ধরা পড়লেও আমরা পরিষেবা বন্ধ রাখি যাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি না থাকে।”
ফলে, বুধবার দুপুরে কলকাতা মেট্রোতে এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে আংশিক পরিষেবা বন্ধ থাকায় শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় দেখা যায় বিশৃঙ্খলার চিত্র। তবে, সন্ধ্যার মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।