কমিশনের কড়া নির্দেশ, অতিরিক্ত চাপেও সময় বাড়ানো নয়

Applications for Adding Names to Voter List Accepted Post Draft Release

কলকাতা: রাজ্যের জেলা প্রশাসন ও ব্লক লেভেল অফিসারদের (BLO) আর্জি উপেক্ষা করেই ভোটার তালিকা ডিজিটাইজেশন সংক্রান্ত সময়সীমা বাড়ানো হবে না  শুক্রবার কলকাতায় জেলা শাসকদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন ভারতের নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (CEC) জ্ঞানেশ ভারতী। কমিশনের কঠোর বার্তাa ৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই সমস্ত ডিজিটাইজেশন কাজ শেষ করতে হবে এবং কোনও অজুহাতেই সময় বাড়ানো হবে না।

Advertisements

জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার BLO-দের কাছ থেকে অতিরিক্ত কাজের চাপ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আসছিল। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানের বহু BLO জানাচ্ছেন, প্রতিদিন অসংখ্য নতুন ভোটার ফর্ম সংগ্রহ, পুরনো ফর্ম সংশোধন, তথ্য যাচাই, এনুমারেশন, ফর্ম ডিজিটাইজেশন এবং ছবি আপলোড কাজের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ।

   

কমিশনের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী এখন শুধুমাত্র ফর্ম নেওয়াই শেষ কাজ নয়৷ প্রত্যেকটি ফর্ম ডিজিটাইজ করে নির্দিষ্ট অ্যাপে আপলোড করতেই হবে। এ ছাড়া বড় পরিবর্তন এসেছে আরেক জায়গায় যদি এনুমারেশন ফর্মে জমা দেওয়া ছবি স্পষ্ট না হয়, তবে BLO-কেই ভোটারের বাড়িতে গিয়ে নতুন ছবি তুলে আপলোড করতে হবে। এতেই মাঠপর্যায়ের কর্মীদের ওপর চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।

বহু BLO ইউনিট অভিযোগ করেছে একেকটি ফর্ম ডিজিটাইজ করতে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা সময় লাগছে। ইন্টারনেটের গতি কম হলে সময় আরও বাড়ছে। ফলে এত কম সময়ে এত বিশাল কাজ শেষ করা প্রায় অসম্ভব।

ফলে একাধিক জেলায় BLO-দের একাংশ বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন, কোথাও কর্মবিরতি, কোথাও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “কমিশনের নির্দেশ আমরা মানছি। কিন্তু কাজের পরিমাণ যেভাবে বেড়েছে, দুই সপ্তাহে সব শেষ করা অসম্ভব।”

Advertisements

এই পরিস্থিতিতে জেলা শাসকেরাও CEC-র বৈঠকে BLO-দের সমস্যাগুলি তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, বিশাল পরিমাণ ডিজিটাইজেশন কাজ এবং অ্যাপের নানা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে BLO-দের সময় বাড়ানো দরকার ছিল।

কিন্তু বৈঠকে CEC স্পষ্ট জানান, ২৫ নভেম্বরের মধ্যেই সব ফর্ম সংগ্রহ শেষ করতে হবে৷ ৪ ডিসেম্বর প্রতিটি তথ্য ডিজিটাইজড হতে হবে৷ সময়সীমা কোনও অবস্থাতেই বাড়ানো হবে না৷ কারণ নির্বাচন কমিশনের যুক্তি ডেডলাইন পিছোলে পুরোটাই নির্বাচনী ক্যালেন্ডার বিঘ্নিত হবে। BLO-দের ওপর চাপ থাকলেও সময়সীমা অপরিবর্তিত থাকবে।

ফলে ক্ষোভ বাড়ছে BLO-দের মধ্যে। তাঁদের ভয় এত কম সময়ের মধ্যে লক্ষাধিক ফর্ম ডিজিটাইজেশন বাস্তবে করা সম্ভব নয়। ভুলের ঝুঁকি বাড়বে, এবং তাঁদেরই দায় নিতে হবে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই নির্বাচন কমিশন কোনও শিথিলতা দেখাতে চাইছে না।