কলকাতা: ১০০ দিনের কাজ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে স্বস্তি অনুভব করলেও কলকাতা হাই করতে আবার বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজে তাকে আটকে আছে। তাই আজ কলকাতা হাইকোর্ট সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে রাজ্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজ করার নির্দেশ দিয়েছে। একাধিন উন্নয়নমূলক কাজে টাকা আটকে আছে এই বিষয়ে মামলা চলছিল এবং রাজ্যের মুখ্য সচিব একাধিকবার ভার্চুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন।
আজ আদালতের বিচারপতি দেবাংশু বসাক স্পষ্ট ভাষায় বলেন “গত ৩ বছর ধরে BSNL এর বিল দেওয়া হয়নি। রাজ্যে কি আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে ?” তিনি মুখ্য সচিবকে ভর্ৎসনা করে বলেন রাজ্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে এবং তা আদালতের তরফ থেকে সিজ করে দেওয়া হবে এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত আদালত নির্দেশ দেবে রিসার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও টাকা এই অ্যাকাউন্ট এ ঢুকবে না।
বাংলা-সহ দেশের ১২টি রাজ্যে SIR! ঘোষণা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের
এবং আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোনো খাতে টাকা বরাদ্দ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন যেভাবে টাকা লেনদেন হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে শামুক আর কচ্ছপের দৌড় প্রতিযোগিতা হচ্ছে। শুধু BSNL নয় বাকি রয়েছে আরও অনেক ব্যাবসায়িক সংস্থার টাকা। বিচারপতি কড়া ভাষায় বলেন তিন বছর ধরে শুধু সময় চাওয়া হচ্ছে কিন্তু সময় আর দেওয়া যাবে না।
এবার BSNL রাজ্যে পরিষেবা বন্ধ করে দিলে কারুর ককিছু বলার থাকবে না। আজ ছুটির দিন দেখিয়ে অজুহাত চাওয়ায় বিচারপতি বলেন ইন্টারনেটও কি ছুটিতে আছে? ইন্টারনেট পরিষেবা যদি ছুটি না থাকে তবে বকেয়া টাকা কেন দেওয়া হচ্ছে না। পরের শুনানির দিন ১০ নভেম্বর এবং সেদিন খোদ মুখ্য সচিবকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।
রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেন যে, আর্থিক সংকট সাময়িক এবং বিলগুলি পর্যায়ক্রমে মেটানো হচ্ছে। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি। বিচারপতি বসাক বলেন, “তিন বছর ধরে একই অজুহাত চলছে। এবার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”এই নির্দেশের পর রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিরোধীরা বলছে, “রাজ্যের আর্থিক অবস্থার চরম দুরবস্থা আদালতের নির্দেশেই প্রমাণিত।
সরকার শুধু বড় বড় কথা বলে, কাজের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।” যা-ই হোক, আদালতের নির্দেশে এখন রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রশাসন কার্যত নজরবন্দি। একদিকে কেন্দ্রের সঙ্গে তহবিল নিয়ে টানাপোড়েন, অন্যদিকে হাইকোর্টের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজের নির্দেশ মমতা সরকারের সামনে নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


