শুক্রবার ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজারহাটের হাড়োয়া খাল সংলগ্ন এলাকায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Bus Accident) । নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবোঝাই একটি বাস সোজা খালে পড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থল জুড়ে শুরু হয় হাহাকার ও চিৎকার। স্থানীয়দের তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৬ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে দেগঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে চিকিৎসার জন্য।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি হাড়োয়া থেকে করুণাময়ীর দিকে যাচ্ছিল। প্রতিদিনের মতোই সকালের দিকে ওই রুটে বহু অফিসগামী ও সাধারণ যাত্রী যাতায়াত করেন। শুক্রবার সকালেও প্রায় একইভাবে যাত্রীবোঝাই হয়ে বাসটি রওনা দেয়। কিন্তু হাড়োয়া খাল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছতেই আচমকা চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মুহূর্তের মধ্যেই বাসটি রেলিং ভেঙে খালে পড়ে যায়। খালে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাসের ভেতর থেকে শুরু হয় আর্তচিৎকার। ঘুম ভাঙে আশপাশের মানুষের। অনেকেই ছুটে আসেন ঘটনাস্থলের দিকে। কেউ বাঁশ, কেউ দড়ি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধারকাজে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, “আমরা জলের মধ্যে নামতে ভয় পাইনি, কারণ মানুষ বাঁচানোই তখন প্রথম কাজ ছিল।” স্থানীয় বাসিন্দাদের এমন মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেছেন পুলিশ ও প্রশাসন।
অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় রাজারহাট থানার পুলিশ। স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে তারা উদ্ধারকাজ শুরু করে। প্রাথমিকভাবে আহতদের কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। গুরুতর আহত কয়েকজনকে পরে স্থানান্তর করা হয়েছে দেগঙ্গা হাসপাতালে। চিকিৎসকদের কথায়, বেশ কয়েকজনের হাড়ভাঙা চোট ও মাথায় আঘাত রয়েছে, তবে এখনো পর্যন্ত কারোর মৃত্যুর খবর মেলেনি।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘন কুয়াশা ও ভেজা রাস্তাই এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাড়াও বাসটির ব্রেক সিস্টেমে সমস্যা ছিল কিনা, তা নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর বাসটিকে খাল থেকে তুলতে ক্রেন আনা হয়। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টার পর জলে তলিয়ে যাওয়া বাসটি ওপরে তোলা সম্ভব হয়।


