সাকসকালে বড়বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলের ২১টি ইঞ্জিন

burrabazar-blaze-fire-services-intensify-operation-to-control-spread

কলকাতা, ১৫ নভেম্বর: শনিবার ভোরের কলকাতা ঘুমে আচ্ছন্ন থাকলেও বড়বাজারের এজরা স্ট্রিটে তখন তৈরি হয়েছে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই ধোঁয়ার গন্ধ টের পান এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। মুহূর্তের মধ্যে দেখা যায় লেলিহান শিখা (Kolkata Fire) ছড়িয়ে পড়ছে একটি ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান থেকে। আর তারপরই মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের অস্তিত্ব থাকায় আগুন আরও দ্রুত ভয়াবহ রূপ নেয়। দোকানের দ্বিতীয় তলে প্রথমে আগুন ধরা পড়লেও দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের বিল্ডিংয়ের একাধিক অংশে।

Advertisements

ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই দমকল বিভাগ ছুটে আসেন। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ২১টি দমকল ইঞ্জিন। সকাল থেকেই চলছে তীব্র লড়াই—আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় এবং দোকানপট্টির ভেতর একের পর এক ছোট দোকান ও গুদাম থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিন সামগ্রীতে আগুন লাগলে যে মাত্রায় তা ছড়িয়ে পড়ে, তার প্রকোপ কমাতে দমকলের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

   

দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, দোকানের দ্বিতীয় তলে সম্ভবত শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ছড়ায়। প্রথমে দোকানের ভেতর থাকা বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশে আগুন ধরা পড়লেও তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করতেই আগুন দ্রুত লাফিয়ে ওঠে। দোকানে প্রচুর পরিমাণে তার, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, সুইচবোর্ড, চার্জার ও অন্যান্য দাহ্য জিনিস থাকার কারণে আগুন ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন পাশের বিল্ডিংয়ের জানলাগুলো গরম করে দেয় এবং ধোঁয়া ঢুকে পড়ে আবাসিক অংশে।

এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে বহু পরিবারকে দ্রুত বাড়ি থেকে বের করে এনে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোরের দিকে হঠাৎ ধোঁয়া দেখে তারা ঘোমটাই খুলে নিচে নেমে আসেন। কেউ কেউ আবার দোকানে থাকা জিনিসপত্র বাঁচাতে চেষ্টা করলেও দমকলকর্মীরা তাঁদের আগুনের কাছে যেতে নিষেধ করেন।

Advertisements

দমকলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগুন এতটাই তীব্র যে এর তাপ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে দমকলকর্মীদের ভারী সুরক্ষা-পোশাক পরে আগুনের কাছে যেতে হচ্ছে। আগুন যাতে আশপাশের আরও কোনও দোকানে বা আবাসিকে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই জন্য বিশেষ ওয়াটার জেট ব্যবহার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে দমকলকর্মীরা বিল্ডিংয়ের ভিতরে আটকে পড়ার সম্ভাবনা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন।

এদিকে, কলকাতা পুলিশের তরফে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে দমকল ইঞ্জিন ও জল ট্যাঙ্কার সহজে ঢুকতে পারে। আশপাশের দোকানদারদেরও দূরে সরে যেতে বলা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে থাকায় ভিতরে থাকা সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি যথেষ্ট বেশি হতে পারে।