কলকাতা: রাজ্যে শুরু হয়েছে SIR (SIR voter list) কর্মসূচি, যার লক্ষ্য ভোটার তালিকায় নাগরিকদের নাম সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা, পুরনো তথ্য হালনাগাদ করা এবং নতুন ভোটারদের নাম তোলা। এই পুরো প্রক্রিয়ায় বুথ লেভেল অফিসার (BLO) দের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) রা, যাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত কোন দল কতজন বিএলএ নিয়োগ করেছে, তার পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, বিএলএ নিয়োগের সংখ্যায় বিজেপি সবার উপরে। দলটি রাজ্যজুড়ে ৩৫,৬৫১ জন বিএলএ নিয়োগ করেছে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, যাঁরা ২৭,৭৪৪ জন বিএলএ নিয়োগ করেছে। সিপিএম প্রায় সমান সংখ্যক, অর্থাৎ ২৭,৩৯২ জন বিএলএ নিয়োগ করেছে। অন্যদিকে ফরওয়ার্ড ব্লক দিয়েছে ১,০৯১ জন। কিন্তু আম আদমি পার্টি ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এখনো পর্যন্ত একজন বিএলএও নিয়োগ করেনি। ফলে অনেক জায়গায় বিএলওরা একাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন।
তবে এই প্রক্রিয়া ঘিরে কিছু বিতর্কও উঠেছে। অভিযোগ, বেশ কিছু এলাকায় ফর্ম বিলি করার সময় নাগরিকদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র বা নথি দাবি করা হচ্ছে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে বুথ লেভেল অফিসার ও বুথ লেভেল এজেন্টদের নথি নেওয়ার অধিকার নেই। তাঁরা শুধুমাত্র ফর্ম বিতরণ ও সংগ্রহের কাজ করবেন।
কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকে, তাহলেই নথি জমা দিতে হবে। রিভিউয়ের সময় সেই নথি যাচাই করা হবে। কিন্তু যদি নাম ইতিমধ্যেই তালিকায় থাকে, তাহলে নতুন করে কোনও নথি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
বাংলার জন্য মোট ১৩ ধরনের নথি নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন যেমন আধার, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট, ব্যাংক পাসবই, জন্মসনদ প্রভৃতি। এই নথিগুলির মধ্যে যেকোনও একটি প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
এদিকে কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইনে পাওয়া যাবে এনুমারেশন ফর্ম। নাগরিকরা চাইলে ইসিআইনেট (ECI-Net) অ্যাপে লগইন করে সরাসরি অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। জেলা নির্বাচন আধিকারিকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও ফর্ম পাওয়া যাবে।
আগে এই পরিষেবা মঙ্গলবার থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তা বিলম্বিত হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইন ফর্ম পরিষেবা চালু হচ্ছে। এনুমারেশন ফর্ম পূরণের সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ফর্ম পূরণ ও সংগ্রহের কাজ শেষ হবে। এরপর ৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা।
যদি কোনও ভুল থাকে বা নাম বাদ যায়, নাগরিকরা ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগ শুনানি চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ২০২৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, যা রাজ্যের বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


