কলকাতা: নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পা রাখতেই বাংলার বাজারে মিলছে শীতের ছোঁয়া। সকালে হালকা ঠান্ডা হাওয়া, আর বাজারের ঝুড়িতে এখন ধীরে ধীরে জায়গা নিচ্ছে শীতের সবজি। কিন্তু দাম নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি রয়ে গেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আজ শনিবার (৮ নভেম্বর, ২০২৫) রাজ্যের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরো বাজারে সবজির গড় দাম ঘুরছে নানা স্তরে কোথাও দাম কমেছে, কোথাও আবার হালকা উর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বড় পেঁয়াজের পাইকারি দর কেজি প্রতি ₹২৬ থেকে ₹৩৩ পর্যন্ত, খুচরো দরে ₹৪৩। অন্যদিকে ছোট পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশি, কেজি প্রতি ₹৪৮ থেকে ₹৬১ পর্যন্ত, খুচরো দরে ₹৭৯। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের সরবরাহে সাময়িক ঘাটতির কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।
হাওড়া ডিভিশনে ফের যাত্রী ভোগান্তি, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন
টমেটোর বাজার আপাতত স্থিতিশীল। পাইকারিতে টমেটো কেজি প্রতি ₹২৫ থেকে ₹৩২ খুচরো বাজারে ₹৪১। তবে কিছু দক্ষিণবঙ্গের জেলায় এখনো দাম ৪৫ টাকার আশপাশে। সবুজ লঙ্কার দামও চড়া — ₹৪৮ থেকে ₹৬১, অর্থাৎ প্রতি কেজি ₹৭৯ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বীট, আলু ও করলা এই তিনটি সবজির দাম আপাতত ক্রেতাবান্ধব। বীট কেজি ₹৩৫ থেকে ₹৫৮, আলু ₹২৫ থেকে ₹৪১ এবং করলা ₹৩৭ থেকে ₹৬১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, ফুলকপি ও বাঁধাকপির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। ফুলকপির দাম ₹৩২ থেকে ₹৫৩ এবং বাঁধাকপি ₹৩০ থেকে ₹৫০ টাকার মধ্যে।
শীতের জনপ্রিয় সবজি গাজর, বরবটি, ক্যাপসিকাম ও ব্রকলির দাম তুলনামূলক বেশি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ₹৪২ থেকে ₹৫৩ পর্যন্ত (₹৬৯ প্রতি কেজি), বরবটি ₹৩৮ থেকে ₹৪৮ (₹৬৩ প্রতি কেজি), আর ক্যাপসিকাম ₹৪১থেকে ₹৫২ (₹৬৮ প্রতি কেজি)। অন্যদিকে, মৌসুমি হার্বস যেমন ধনেপাতা, পুদিনা ও কারি পাতা— এই সপ্তাহে দাম তুলনামূলক কম। ধনেপাতা ₹১২ থেকে ₹২০ টাকায় মিলছে।
তবে বাজারের চমক হল রসুন ও আদার দাম। রসুনের পাইকারি দর ₹১০২ থেকে ₹১৩০ পর্যন্ত, অর্থাৎ খুচরো দরে কেজি প্রতি ₹১৬। আদার দামও যথেষ্ট চড়া ₹৭৯ থেকে ₹১০০, অর্থাৎ ₹১৩০ প্রতি কেজি পর্যন্ত উঠেছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ পুরোপুরি নিয়মিত হলে দাম আরও কিছুটা কমবে। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে উত্তর ভারত ও দক্ষিণবঙ্গের চাষের পণ্য আসতে শুরু করলে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
একজন পাইকারি বিক্রেতা জানালেন, “চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। শীতের সবজি বাজারে আসছে, কিন্তু পরিবহন খরচ ও বৃষ্টির প্রভাব এখনো কিছুটা টান ফেলছে।” সাধারণ ক্রেতারা অবশ্য আশায় বুক বাঁধছেন— ডিসেম্বরের শুরুতেই আলু, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, মটরশুঁটির দামে বড় পতন দেখা যাবে।
