কলকাতা, ১৬ নভেম্বর: রবিবারের ছুটির দিন মানেই সকালবেলা বাজারে একটু ভিড় বেশি। সপ্তাহজুড়ে কাজের ব্যস্ততার পর অনেকে ছুটির দিনের বাজারকেই প্রাধান্য দেন। আর সেই বাজারে খরচের থলি কতটা ভারী হবে, তা নির্ভর করে প্রতিদিনের সবজির দামের ওপর। নভেম্বরের মাঝামাঝি গিয়ে শীতের আবহ ধীরে ধীরে শহর-গ্রামে ছড়িয়ে পড়লেও সবজির দামে তেমন স্থিরতা নেই। কোথাও দাম কমেছে, কোথাও আবার বেড়েছে—ফলে সাধারণ মানুষের চিন্তা বেড়েছে কিছুটা।
আজকের বাজারদরে সবচেয়ে নজর কাড়া বিষয় হলো পেঁয়াজ-টমেটো-আলুর মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সবজিতে মিশ্র প্রবণতা। বড় পেঁয়াজ আজ বিক্রি হয়েছে ₹27–45 প্রতি কেজি দামে, যা গত কয়েক দিনের তুলনায় সামান্য ওঠানামা হলেও চাহিদা কমেনি। ছোট পেঁয়াজের দাম রয়েছে ₹45–74 প্রতি কেজি—এই পেঁয়াজ মূলত রন্ধনপ্রেমীদের আলাদা কদর পায়, তাই দাম কিছুটা চড়া থাকলেও বাজারে ভালো বিক্রি হয়েছে।
ফরিদাবাদ থেকে ৮০০ কিমি পথ পেরিয়ে নৌগামে ২,৯০০ কেজি দাহ্য পদার্থ পৌঁছায়
টমেটো বাজারে আজ স্থিরতা দেখা গেলেও ₹30–50 প্রতি কেজি দামে বিক্রি হওয়ায় অনেকেই স্বস্তির কথা বলেছেন। শীতের শুরুতে টমেটোর দামে সাধারণত উত্থান-পতন দেখা যায়, তবে আজ তার ছাপ খুব বেশি পড়েনি। কাঁচা লংকা ও বিটরুটের দামও ছিল কিছুটা উচ্চমুখী—লংকা ₹45–74, বিটরুট ₹33–54 প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে লংকা এখন প্রায় ‘লাক্সারি’ পণ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই অনেকে বাজারে মন্তব্য করেছেন।
আলুর দাম আজ অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা স্থির—₹35–58 প্রতি কেজি। শীতের সকালে আলুর চাহিদা বাড়লেও এই দামকে সাধারণ মানুষ ‘সহনীয়’ বলেই মনে করছেন। শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় নয়, অন্যান্য শাকসবজির দিতেও ওঠানামা স্পষ্ট। কাঁচা কলা বিক্রি হয়েছে ₹10–17, লাল শাক ও ধনে পাতা ₹15–25, আমলকি ₹85–140, করলা ₹40–66, ঝিঙে ₹31–51, ক্যাপসিকাম ₹46–76, বাঁধাকপি ₹29–48 দামে।
সবজির দামের মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর ছিল আজ ড্রামস্টিক (সজনে)—₹60–99 প্রতি কেজি দামে বিক্রি হয়েছে। আবার বেবি কর্ন, ব্রড বিনস, ফ্রেঞ্চ বিনস-এর দামও ছিল তুলনামূলক একটু বেশি। শহুরে পরিবারে এসব বিদেশি বা আধুনিক রন্ধনশৈলীর সঙ্গে যুক্ত সবজির চাহিদা বাড়ায় দামে চড়াভাবই দেখা গেছে।
অন্যদিকে, শীতের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত গাজর, ফুলকপি ও লাউ—এই তিনটির দাম আজ সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়েছে। গাজর ₹43–71, ফুলকপি ₹28–46, লাউ ₹31–51—যা অনেকের ঝোল-ভাত বা ডালনায় হাত খুলে ব্যবহার করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
বাজারের এক বিক্রেতা বললেন, “শীত পড়লেই সবজির জোগান বাড়তে শুরু করে। তবে পরিবহনের খরচ, পাইকারি দরের ওঠানামা—সব মিলিয়ে আমাদেরও দাম বাড়াতে বা কমাতে হয়। এখন থেকে আরও ১০–১৫ দিনের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা স্থির হবে।”
আজ রবিবারের বাজারে একদিকে উৎসবের আমেজ, অন্যদিকে দামের ওঠানামায় মাঝেমধ্যেই অনেকে চিন্তায় ভ্রু কুঁচকেছেন। তবে আশা করা যাচ্ছে, আসন্ন ডিসেম্বর মাসে আরো বেশি উৎপাদন বাজারে এলে অনেক সবজির দাম আবার স্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসবে।


