দেশভাগের বলি হিন্দু বাঙালিদের নাম বাতিলে আগুন জ্বালানোর হুমকি বাংলা পক্ষর

bangla-pokkho-deputation-to-eci-demand-remove-fake-voters-sir

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন বা SIR প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যজুড়ে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই আজ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে ডেপুটেশন দিল ভারতীয় বাঙালিদের জাতীয় সংগঠন বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিকেলে কলকাতার নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের সামনে জমায়েত করেন বাংলা পক্ষের (Bangla Pokkho) সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, অরিন্দম চ্যাটার্জী, মহঃ সাহিন এবং কলকাতা জেলার সম্পাদক সৌম্য বেরা।

Advertisements

ডেপুটেশনে বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho) তিন দফা দাবি তুলে ধরে সহকারী নির্বাচনী আধিকারিকের হাতে লিখিত স্মারকলিপি জমা দেয়। প্রথমত, সংগঠনের দাবি—বাংলার ভোটার তালিকায় যারা বহিরাগত ভুয়ো ভোটার এবং যাদের দুই রাজ্যে ভোটার কার্ড রয়েছে, তাদের নাম SIR প্রক্রিয়ায় বাংলার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে সেই অপরাধীদের নাম ও পশ্চিমবঙ্গে দেখানো ঠিকানা প্রকাশ্যে আনতে হবে। দ্বিতীয় দাবি, ঘটি হিন্দু বাঙালি, ঘটি মুসলমান বাঙালি এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে আসা উদ্বাস্তু হিন্দু বাঙালিদের একজনেরও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। তৃতীয় দাবি, ইন্দো-নেপাল চুক্তির অপব্যবহার করে যারা অবৈধভাবে বাংলার ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে, তাদের এবং তাদের সন্তানদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে, ঠিক যেমন ব্যবস্থা বিহারে SIR চলাকালীন নেওয়া হয়েছিল।

   

গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আজ কেন্দ্রীয় সরকারের SIR চক্রান্তে বাংলার মাটিতে জগৎশেঠের সন্তানরা বাংলার ভূমিপুত্র, বাবা লোকনাথের সন্তানরা আর হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের শিষ্যরা বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন। বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho) চায় বাংলার ভোটার তালিকা থেকে সব ভুয়ো ও অবৈধ নাম বাদ যাক। কমিশনকে ডুয়াল ভোটার কার্ড বিষয়ে কঠোর হতে হবে। যদি দেখা যায় কারও অন্য রাজ্যে ভোটার কার্ড আছে, তাহলে বাংলার ভোটার কার্ড বাতিল করতে হবে। দুই রাজ্যে ভোটার কার্ড বানানো অপরাধীদের বিরুদ্ধে বাংলা পক্ষ ফৌজদারি মামলা করবে।” তিনি আরও বলেন, “ভারত-নেপাল চুক্তির অপব্যবহার করে যারা অন্য দেশ থেকে এসে এখানে ভোটার হয়ে গেছে, তাদের নাম বাদ দিতে হবে। তবে দেশভাগের বলি হিন্দু বাঙালিদের নাম বাদ দেওয়া চলবে না। এমন হলে বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho) চুপ করে থাকবে না, আগুন জ্বলবে।”

ডেপুটেশন শেষে সংগঠনের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে CAA-র মাধ্যমে মাত্র ১০ জন নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তাহলে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু মতুয়ার কী হবে? কমিশনের আধিকারিকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, শুধু CAA-তে আবেদন করলেই ভোটার লিস্টে নাম উঠবে না, নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট লাগবে। শান্তনু ঠাকুর মতুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, কারণ শুধু আবেদন করে কোনো লাভ নেই।”

Advertisements

তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে বলেন, “ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পশ্চিমবঙ্গে আসা উদ্বাস্তু হিন্দু বাঙালিদের ভোটাধিকার রক্ষা করতে হবে। নাগরিকত্বের নামে প্রতারণা বরদাস্ত করা হবে না।”

ডেপুটেশনের পর নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের বাইরে বাংলা পক্ষের সদস্যরা “বাংলার ভোট বাংলারই হাতে” এবং “ভুয়ো ভোটার তাড়াও” স্লোগান দেয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমিশনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবে বাংলা পক্ষ।