কলকাতা: শারদোৎসবের মুখে ভয়াবহ আবহাওয়ার করাল ছায়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতর আগে থেকেই সতর্ক করেছিল—পরপর তিনটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। সেই পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলল। মিতাগ, নিয়োগুরি এবং রাগাসা—তিনটি টাইফুনের দাপটেই ইতিমধ্যেই তছনছ হয়েছে চিন, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, জাপান ও তাইওয়ান। এদিকে বাংলার আকাশেও বিপর্যয়ের মেঘ। সোমবার রাতে কলকাতা সাক্ষী থাকল চরম ভারী বৃষ্টির, যা ভেঙে দিল ৩৯ বছরের রেকর্ড।
তিন ঘূর্ণিঝড়ের দাপট
দক্ষিণ চিন সাগরে তৈরি হওয়া মিতাগ ইতিমধ্যেই আছড়ে পড়েছে গুয়াংডং উপকূলে। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া এই টাইফুন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে থাইল্যান্ডে। এদিকে প্রশান্ত মহাসাগরে উৎপন্ন নিয়োগুরি ক্রমশ সুপার টাইফুনে পরিণত হয়ে ফিলিপিন্সের মানিলা ও জাপানের টোকিওর দিকে ধেয়ে আসছে। একই সঙ্গে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে টাইফুন রাগাসা। ইতিমধ্যেই তাইওয়ানে এর তাণ্ডবে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। হংকংয়েও কার্যত স্তব্ধ জনজীবন।
কলকাতায় রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টি Kolkata record rainfall
এদিকে কলকাতায় বৃষ্টির পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আলিপুর হাওয়া অফিস। সোমবার উত্তর–পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ উত্তর–পশ্চিম দিকে সরে এসে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন করে তোলে। আবহবিদরা মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও বাস্তবে শহর ভিজল চরম ভারী বৃষ্টিতে।
এক রাতেই ভেঙে গেল গত ৩৯ বছরের রেকর্ড। দেড়শো বছরে মাত্র ৯ বার এমন বৃষ্টি দেখেছে কলকাতা। ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যার রাতে শহর যতটা ভিজেছিল, সোমবার রাতে প্রায় একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হল মহানগর। আবহাওয়া দফতরের আবহবিদ হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, ‘‘প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়েরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব থাকে। তার সঙ্গে মিলিত হয়েছে নিম্নচাপ। ফলে বৃষ্টির মাত্রা অপ্রত্যাশিত ভাবে বেড়ে গিয়েছে।’’
আতঙ্কে উৎসবের মরশুম
দুর্গাপুজোর আগে এমন বৃষ্টির দাপটে চিন্তায় সাধারণ মানুষ ও পুজো উদ্যোক্তারা। বহু জায়গায় জল জমে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, আগামী ক’দিনে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
