১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক মহাকুম্ভ (Prayagraj) মেলা, যা ১৪৪ বছর পর আয়োজিত হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। এই মেলা (Prayagraj) ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এবং আগামীদিনে এটি বিশ্বজুড়ে ধর্মপ্রাণ ভক্তদের জন্য এক বড় অনুষ্ঠান হয়ে উঠবে। যোগী সরকারের ধারণা, এবার রেকর্ড পরিমাণ ভক্তের সমাগম হবে, এবং প্রায় ৪০ কোটি ভক্ত এই মেলায় অংশগ্রহণ করবে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই মেলার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এবং সুষ্ঠুভাবে মেলার আয়োজন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মহাকুম্ভ মেলা (Prayagraj) একটি ধর্মীয় উৎসব, যেখানে প্রতি ১২ বছর পর একাধিক আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান এবং পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলা পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে পরিচিত, এবং এর প্রতি ভক্তদের আগ্রহ কোনো অংশে কমে যায়নি। এবারের মহাকুম্ভ মেলার আয়োজনের জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার বিভিন্ন স্তরে ব্যবস্থা নিয়েছে, যাতে ভক্তরা সহজে এবং সুরক্ষিতভাবে মেলায় পৌঁছতে পারেন।
এবারের মহাকুম্ভ মেলায় (Prayagraj) ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও বিদেশি ভক্তরা একত্রিত হয়ে পুণ্যলাভের আশায় প্রয়াগরাজে আসবেন। বিশেষ করে বিদেশি ভক্তদের উপস্থিতি এবার আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে মেলা পরিচালনার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি বাস প্রস্তুত করা হয়েছে, যেগুলি ৭৫টি পয়েন্ট থেকে সরাসরি মেলা এলাকায় পৌঁছে যাবে। এছাড়া, ৫৫০টি শাটল বাসও বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে প্রয়াগরাজে যাত্রী পরিবহণ করবে।
রাজ্যগুলির মধ্যে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়, রাজস্থান, এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে সরাসরি বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকেও মহাকুম্ভ মেলার জন্য বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়েছে। সারা দেশে ১৩ হাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচল করছে, যা ভক্তদের দ্রুত প্রয়াগরাজে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবে। এছাড়া, ৫০টি ছোটো শহর থেকেও সরাসরি ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সুবিধার জন্য দেশের প্রথম সারির শহরগুলি থেকে সরাসরি বিমান চলাচল করবে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, বিলাসপুর, হায়দরাবাদ, রায়পুর, লখনৌ, ভুবনেশ্বর, কলকাতা, দেরাদুন, এবং চণ্ডীগড় থেকে সরাসরি প্রয়াগরাজে বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, চেন্নাই, জম্মু, পাটনা, অযোধ্যা, নাগপুর, পুনে, ভোপাল থেকেও বিমানে চেপে মেলা এলাকাতে পৌঁছানো যাবে।
বিমানবন্দরে নেমে ভক্তরা ট্যাক্সি বা ক্যাবের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন, এবং এর জন্য ভাড়া ৫০০ থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এর ফলে, ভক্তদের জন্য মহাকুম্ভ মেলায় পৌঁছানো সহজ হবে, এবং তারা সহজেই তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারবেন।
এবারের মহাকুম্ভ মেলা একেবারেই বিশেষ এবং তার সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করতে সরকার সমস্ত প্রয়াস চালাচ্ছে। এই ঐতিহাসিক মেলায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা এবং সুবিধার জন্য প্রতিটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে ভক্তরা শান্তিপূর্ণভাবে পুণ্যস্নান এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন।