খড়দহ: শান্ত এলাকা, অভিজাত আবাসন। কিন্তু সেই পর্দার আড়ালেই চলছিল ভয়াবহ ষড়যন্ত্র? খড়দহের রিজেন্ট পার্কের একটি ফ্ল্যাট থেকে সোমবার সকালে উদ্ধার হল অন্তত ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং হাজার রাউন্ডের বেশি গুলি। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক নগদ টাকাও। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে (Khardah police raid weapons)।
দীর্ঘ নজরদারির পর হানা
সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে থাকতেন এক ব্যক্তি, নাম মধুসূদন মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ নজরদারির পর বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট সোমবার ভোরে হানা দেয় ওই অ্যাপার্টমেন্টে। সেখানেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, দেশি-বিদেশি মিলিয়ে অন্তত ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত ছিল ফ্ল্যাটে। এর মধ্যে রয়েছে সেমি-অটোমেটিক রাইফেল, পিস্তল ও রিভলভারও। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, পুরুলিয়ায় তৈরি এই অস্ত্রগুলি রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল মুঙ্গেরের এক চক্রের মারফত। সেই সূত্র ধরেই মধুসূদনের সন্ধান পান তদন্তকারীরা।
অস্ত্র মজুতের কারণ কী?
অস্ত্র মজুতের কারণ ও উদ্দেশ্য নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ পুলিশ। তবে তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল, এবং ভোটের আগে রাজ্যে কোনো বৃহৎ চক্রান্তের অংশ কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিটন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে।
বাসিন্দারা স্তম্ভিত, প্রশ্নে প্রশাসন
এলাকার বাসিন্দারা রীতিমতো হতবাক। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “ওঁকে তো আমরা শান্ত স্বভাবের বলেই জানতাম। কারও সঙ্গে ঝামেলা করতেন না। ভদ্র, মিশুক মানুষ। বিশ্বাসই করতে পারছি না এমন কিছু ঘটতে পারে।”
অন্য এক জন বলেন, “এই ফ্ল্যাটে আগেও ভাড়াটে এসেছেন, গেছেন। কিন্তু এত অস্ত্র কীভাবে এল, ভেবেই শিউরে উঠছি। আমাদের পাড়ার একটা নাম আছে!”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: সরব আইএসএফ বিধায়ক
ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তাঁর বক্তব্য,
“ভোট আসছে বলেই এসব শুরু হচ্ছে। এক হাজার রাউন্ড গুলি মানে এক হাজার প্রাণ! খড়দহে এত অস্ত্র ঢুকল কীভাবে? এর জবাব দিতে হবে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীকে।”
বর্তমানে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঘটনার সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত, তা জানতে আরও তল্লাশি ও জেরা চালাচ্ছে প্রশাসন।