ব্যারাকপুরে উত্তেজনা, হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তারকে চোটপাট কৌস্তভের

ব্যারাকপুরে একটি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav) হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তার ও নার্সদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে…

Koustav threatens doctors

ব্যারাকপুরে একটি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav) হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তার ও নার্সদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।

এই ঘটনায় তিনি চিকিৎসকদের অপমান করেছেন এবং রোগীর মৃত্যুর জন্য তাদের দায়ী করে মামলার হুমকি দিয়েছেন। ডক্টরস ফোরাম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুখ্য সচিবের কাছে কৌস্তভের (Kaustav) গ্রেফতারের দাবিতে চিঠি লিখেছে। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক ও স্বাস্থ্য খাতে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

   

ঘটনার বিবরণ

এক্স-এ পোস্ট অনুসারে, ব্যারাকপুরের একটি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর পর কৌস্তভ বাগচী (Kaustav) হাসপাতালে প্রবেশ করেন এবং চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়ান। তিনি দাবি করেছেন যে, রোগীর অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে।

তবে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অক্সিজেন সরানোর বিরুদ্ধে পরামর্শ দেননি কিন্তু তা সত্ত্বেও কেউ মৃত রোগীর অক্সিজেন খুলে দেয়। এই ঘটনার পর রোগীর মৃত্যু হলে কৌস্তভ চিকিৎসকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন। এক্স-এ প্রকাশিত একটি ভিডিওতে কৌস্তভকে (Kaustav) হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে উত্তেজিত অবস্থায় কথা বলতে দেখা গেছে।

চিকিৎসক ফোরামের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার পর চিকিৎসক ফোরাম (Kaustav)  তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্য সচিবের কাছে একটি চিঠি লিখেছে, যাতে কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। ফোরামের সদস্যরা বলেছেন, “চিকিৎসক ও নার্সদের উপর এই ধরনের হুমকি ও অপমান অগ্রহণযোগ্য। হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব এবং রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ চিকিৎসা পরিষেবার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।”

তারা হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিও তুলেছে। এই ঘটনা সাগর দত্ত হাসপাতালে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ঘটে যাওয়া একটি অনুরূপ ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে এক রোগীর মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসক ও নার্সদের উপর হামলা চালিয়েছিল।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা বেড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) কৌস্তভের (Kaustav) আচরণের তীব্র নিন্দা করে বলেছে, “বিজেপি নেতারা হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় হিংসা ও হুমকি ছড়াচ্ছে।” তারা এই ঘটনাকে বিজেপির “গুন্ডামি” হিসেবে অভিহিত করেছে।

Advertisements

অন্যদিকে, বিজেপি দাবি করেছে যে, কৌস্তভ রোগীর পরিবারের পক্ষে কথা বলছিলেন এবং হাসপাতালের অবহেলার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা কৌস্তভের পূর্বের বিতর্কের সঙ্গে মিলে যায়, যেমন ২০২৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্যের জন্য তাঁর গ্রেফতার।

হাসপাতালে নিরাপত্তার প্রশ্ন

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক ও নার্সদের নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনেছে। ২০২৪ সালে আর জি কর মেডিকেল কলেজে একজন ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসকরা হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন।

সাগর দত্ত হাসপাতালে হামলার পর চিকিৎসকরা কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ করেছিলেন এবং আরও পুলিশ মোতায়েন ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি তুলেছিলেন। ব্যারাকপুরের এই ঘটনা সেই দাবিকে আরও জোরদার করেছে।

নৌবাহিনীতে অফিসার হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ, দ্রুত আবেদন করুন

কৌস্তভ বাগচীর (Kaustav) বিরুদ্ধে হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নতুন প্রশ্ন তুলেছে। চিকিৎসক ফোরামের গ্রেফতারের দাবি এবং হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান এই ঘটনার গুরুত্ব বাড়িয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, তবে আগামী দিনে এই বিতর্ক রাজ্যের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা দেখার বিষয়।