মিলন পণ্ডা, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি (Kanthi) পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর রীনা দাসের বিরুদ্ধে সুপারি কিলার দিয়ে নিজের ভাই রামপদ দাস (রাজু, ৪২) কে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় কাঁথি শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রীনা দাসের অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় ভাইয়ের সঙ্গে বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার গভীর রাতে রামপদ দাস তাঁর দিদি রীনার বাড়িতে এক ব্যক্তির আনাগোনার প্রতিবাদ করেন। এরপর রীনা কথিতভাবে সুপারি কিলারের সাহায্যে ভাইকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
অভিযোগ, মারধরের পর রামপদকে বিষ প্রয়োগ করা হয়। বিষক্রিয়ার অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পরিবার প্রথমে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে এবং পরে তমলুকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। চারদিন ধরে জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ের পর সোমবার রাত ৭টায় চিকিৎসকরা রামপদকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া, রীনা দাসের বিরুদ্ধে রামপদের স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। তাঁকেও অসুস্থ অবস্থায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, রীনা দাসের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এলাকায় আগে থেকেই বিতর্কের বিষয় ছিল। তিনি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্থানীয়দের উপর প্রভাব বিস্তার করতেন বলে অভিযোগ। রামপদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়রা পুলিশের কাছে দ্রুত তদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রীনা দাসের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে, এবং সুপারি কিলারদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে, রীনা এখনও পলাতক বলে জানা গেছে। স্থানীয় পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা সিসিটিভি ফুটেজ এবং সাক্ষীদের বয়ান পরীক্ষা করছি। অভিযুক্তদের ধরতে তৎপরতা চলছে।” এই ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।
কাঁথির বাসিন্দারা এই ঘটনাকে “নৃশংস এবং হৃদয়বিদারক” বলে অভিহিত করেছেন। রামপদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, “আমরা ন্যায় চাই। আমাদের ভাইকে এভাবে হারানোর জন্য দায়ীদের শাস্তি হওয়া উচিত।” এই ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তদন্তের ফলাফল এবং রীনা দাসের গ্রেপ্তারির দিকে এখন সকলের নজর।