সাংসদদের চিঠি দিয়ে সোমবারের ডেডলাইন বেঁধে দিলেন চাকরিহারা রা

চাকরি হারা (jobless-teachers) শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের দাবি পূরণের জন্য নতুন করে আন্দোলনের পথে পা বাড়িয়েছেন। এবার তারা সমস্ত সাংসদদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে…

Hope for Justice: Education Secretary Meets SSC-Terminated Teachers

চাকরি হারা (jobless-teachers) শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের দাবি পূরণের জন্য নতুন করে আন্দোলনের পথে পা বাড়িয়েছেন। এবার তারা সমস্ত সাংসদদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সোমবার, ২৬ মে, পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সেন্ট্রাল পার্কের পাশে মিলনমেলা প্রাঙ্গনে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজ্যের শিক্ষক সমাজের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। যদিও কলকাতা হাই কোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ ২০০ জন রোটেশনের মাধ্যমে বিক্ষোভে অংশ নিতে পারেন কিন্তু কোনো ভাবেই রাস্তা দখল করে।

   

পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ (jobless-teachers)

গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তার ফলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি হারানোর (jobless-teachers)ঘটনা তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বাতিল হয়েছে হাজার হাজার শিক্ষকের চাকরি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকারা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন।

তবে তাদের দাবি এখনও পুরোপুরি পূরণ হয়নি, যা তাদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন চাকরি না থাকলেও গ্রূপ সি এবং ডি কর্মচারীদের মাসিক ভাতা দেবে রাজ্য সরকার।

চাকরি হারা (jobless-teachers)শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন, ‘এসএসসি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ’, এবার তাদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংগঠনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াই করছি। আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক, এটাই আমাদের প্রধান দাবি।

কোটি টাকা পেয়েও ব্যৰ্থ! তালিকায় হাই-প্রোফাইল ক্রিকেটাররা

সাংসদরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন

সাংসদরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব পালন করুন। আমরা তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি এবং সোমবার পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আমরা সেন্ট্রাল পার্কের পাশে মিলনমেলা প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ শুরু করব।”
চাকরিপ্রার্থীদের এই চিঠিতে তাদের দাবিগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধানত, তারা চাকরি ফিরিয়ে (jobless-teachers)দেওয়ার পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও, যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন, তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। সংগঠনের এক সদস্য বলেন, “আমরা বছরের পর বছর ধরে ক্লাসে পড়িয়েছি, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়েছি। কিন্তু এখন আমাদের নিজেদের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত। এটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

Advertisements

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে গভীর হতাশা এবং ক্ষোভ

এই আন্দোলনের পেছনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে গভীর হতাশা এবং ক্ষোভ কাজ করছে। অনেকেই জানিয়েছেন, চাকরি হারানোর ফলে তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একজন প্রাক্তন শিক্ষিকা বলেন, “আমার দুটি সন্তান। চাকরি হারানোর পর থেকে তাদের পড়াশোনার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা শুধু আমাদের চাকরি ফিরিয়ে চাই, যাতে আমাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারি।”

সেন্ট্রাল পার্কের পাশে মিলনমেলা প্রাঙ্গনে বিক্ষোভের ঘোষণা শিক্ষক সমাজের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই স্থানটি আগেও বিভিন্ন আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি তুলে ধরার পরিকল্পনা করছেন। তবে, প্রশাসনের তরফে এই বিক্ষোভের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শিক্ষকদের এই আন্দোলন (jobless-teachers)শুধু তাদের নিজেদের অধিকারের লড়াই নয়, বরং শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্নও তুলে ধরছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। একজন শিক্ষাবিদ বলেন, “শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড। তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া মানে শিক্ষার ভিত্তিকে দুর্বল করা। সরকারকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলো ইতিমধ্যেই শিক্ষকদের সমর্থনে সরব হয়েছে। এক বিরোধী নেতা বলেন, “সরকারের ব্যর্থতার কারণেই এই শিক্ষকরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে এই আন্দোলন আরও তীব্র হবে।” অন্যদিকে, শাসক দলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে এবং শীঘ্রই একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করা হবে।”

সোমবারের ডেডলাইনের আগে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তা নিয়ে সবার নজর রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, (jobless-teachers)তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, তবে দাবি পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। সেন্ট্রাল পার্কের মিলনমেলা প্রাঙ্গনে শুরু হতে চলা এই বিক্ষোভ কী রূপ নেয়, তা সময়ই বলবে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—চাকরি হারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের অধিকারের জন্য লড়াইয়ে পিছপা হবেন না।

এই ঘটনা শুধু শিক্ষকদের জন্যই নয়, সমগ্র সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরছে। শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার এবং শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তা আগামী দিনে রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।