এসএসসি তালিকায় ‘অযোগ্য’ প্রার্থী? সুপ্রিম নির্দেশ ভাঙার অভিযোগে হাই কোর্টে চাকরিপ্রার্থীরা

Ineligible candidates in WB SSC list

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ পেতেই ফের উঠল অনিয়মের বিস্ফোরক অভিযোগ। অভিযোগকারীদের দাবি, তালিকায় জায়গা পেয়েছেন একাধিক ‘অযোগ্য’ প্রার্থী, এমন নাম যাদের বিষয়ে আগে থেকেই আদালতে কঠোর পর্যবেক্ষণ রয়েছে। বিপরীতে, বহু নতুন পরীক্ষার্থী—যাঁরা লিখিত পরীক্ষায় পূর্ণ ৬০ নম্বর পেয়েছেন—তাঁদের কেউ কেউ ইন্টারভিউয়ের ডাকই পাননি।

Advertisements

এই বৈপরীত্যে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-আবেদনকারীরা সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাকারীদের সওয়াল—সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ‘দাগি অযোগ্য’ নাম ইন্টারভিউ তালিকায় রাখা হল?

   

অভিজ্ঞতার নামে অতিরিক্ত নম্বর!

অভিযোগ আরও গুরুতর। প্রাথমিক স্কুলে স্বল্প সময় কাজ করেছেন—এমন ব্যক্তিদেরও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি উঠেছে। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, “আংশিক সময়ের কাজকেও অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে সুবিধা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।”

এই সব অনিয়মের জেরেই হাই কোর্টে মামলা। বিচারপতি অমৃতা সিংহর বেঞ্চে আগামী বুধবার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।

প্রকাশের পরেই তীব্র ক্ষোভ Ineligible candidates in WB SSC list

শনিবার রাতে একাদশ–দ্বাদশের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতেই দেখা যায়, মোট ২০ হাজার নাম থাকলেও চাকরি হারিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করা বহু প্রার্থী তালিকার বাইরে। আবার নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এমনও আছেন যারা ৬০-এ ৬০ পেয়েও ডাক পাননি।

Advertisements

এসএসসি আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “তালিকায় নাম নেই। কাট-অফের থেকে তিন নম্বর কম পেয়েছি। অথচ এমন প্রার্থীর নাম রয়েছে যিনি ‘অযোগ্য’-র তালিকায় ছিলেন!”

আর এক চাকরিহারা শিক্ষক জানান, “পাঁচ-ছ’ বছর চাকরি করার পরও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার দায় আমাদের উপর চাপানো হচ্ছে। আমাদের দোষ কোথায়? আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়িয়ে?” এখন তাঁরা অপেক্ষায় নবম-দশম শ্রেণির ফলপ্রকাশের, সেখানে কোনও সুবিচারের সুযোগ থাকে কি না।

এসএসসি-র পালটা

এসএসসি অবশ্য অনিয়মের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে-

  • এ বছর একাদশ–দ্বাদশে শূন্যপদ ১২,৪৪৫।
  • লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০ হাজার প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
  • প্রথমে নথি যাচাই, তারপর ইন্টারভিউ—এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্যই প্রতিটি শূন্যপদে ১৬ জন করে প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে।
  • কমিশনের দাবি—“সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।”

তবুও প্রশ্ন থামছে না

তালিকার অসঙ্গতি, ‘অযোগ্য’ নামের পুনরায় প্রত্যাবর্তন, পূর্ণ নম্বর পেয়েও ডাক না পাওয়া—সব মিলিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের সন্দেহের মুখে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশের দিকেই এখন তাকিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-আবেদনকারীরা।