ভিড় নিয়ন্ত্রণে জগদ্ধাত্রী পুজোয় শিয়ালদহ রুটে বাড়তি লোকাল পরিষেবা রেলের

শিয়ালদহ: দুর্গাপুজো আর কালীপুজো শেষ হতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজোর উন্মাদনা। নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে হুগলির চন্দননগর দুই শহরেই এখন আলোকসজ্জায় সাজো সাজো রব। প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমাবেন এই দুই ঐতিহ্যবাহী পুজোয়। দর্শনার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেল ঘোষণা করল বিশেষ লোকাল ট্রেন (Local Train) পরিষেবা।

Advertisements

ভারতীয় রেলের প্রকাশিত বিবৃতি অনুযায়ী, ৩০ এবং ৩১ অক্টোবর রাতে কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটের মধ্যে চলবে একজোড়া স্পেশ্যাল লোকাল ট্রেন। যাত্রীদের সুবিধার জন্য এই ট্রেন দুটি সব স্টেশন এবং সমস্ত হল্ট স্টেশনেও থামবে। এতে পুজোর দিন রাতে বাড়ি ফেরা অনেক সহজ হবে।

   

রানাঘাট থেকে বিশেষ ট্রেনটি ছাড়বে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে, এবং কৃষ্ণনগর থেকে অপর ট্রেনটি ছাড়বে রাত সাড়ে ১২টায়। যাত্রীদের ভিড় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কর্মী, সিকিউরিটি ও সিগন্যাল কর্মীদের মোতায়েনের পরিকল্পনাও করা হয়েছে।

চলতি বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর ষষ্ঠী ছিল ২৭ অক্টোবর, সপ্তমী ২৮ অক্টোবর, অষ্টমী ২৯ অক্টোবর এবং নবমী ৩০ অক্টোবর। তিথি অনুযায়ী মূল পূজা শুরু হয়েছে ২৯ অক্টোবর থেকে। প্রতি বছর অষ্টমী ও নবমীর দিন কৃষ্ণনগর ও চন্দননগরে দেখা যায় সর্বাধিক দর্শনার্থীর ভিড়।

পুজোর সময় কৃষ্ণনগরের রাজপথে যেমন দেখা যায় ঐতিহ্যবাহী প্রতিমা ও শোভাযাত্রা, তেমনি চন্দননগরে থাকে শিল্পিত আলোকসজ্জা, যা দেখতে ভিড় জমান রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ।

Advertisements

ঐতিহাসিকভাবে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সূত্রপাত হয়েছিল রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। তাঁর সময় থেকেই এই পুজো রাজকীয় মর্যাদা পায় এবং আজও সেই ঐতিহ্য বজায় রয়েছে। অপরদিকে, চন্দননগরের পুজো এখন আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছে তাদের সৃজনশীল লাইটিং ও থিমের কারণে।

প্রতিবছর চন্দননগরের আলোকসজ্জা দেখতে হাজির হন হাজার হাজার দর্শক। এমনকি বিজয়া দশমীর পরেও এখানে ভিড় থাকে ‘বিজয়া শোভাযাত্রা’ ঘিরে, যা চন্দননগরের সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

বর্ধিত যাত্রী চাপ সামলাতে রেল ইতিমধ্যেই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধির পাশাপাশি, প্ল্যাটফর্মে বাড়ানো হয়েছে আলোর ব্যবস্থা, ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে রেল পুলিশ। রেল কর্তৃপক্ষের মতে, “দর্শনার্থীদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে আমরা অতিরিক্ত ট্রেন পরিষেবা শুরু করছি। নিরাপত্তা ও যাত্রাসুবিধাই আমাদের অগ্রাধিকার।”

রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পার্কিং এলাকা, এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে পুজোর সময় শহরজুড়ে শৃঙ্খলা বজায় থাকে।