বড় সিদ্ধান্ত: ১৬ কোচের যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর ঘোষণা রেলমন্ত্রীর

ভারতীয় রেল (Indian Railways) আরও আধুনিকীকরণের পথে এক নতুন মাইলফলক ছুঁতে চলেছে। এবার ১৬ বগির নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিল রেলমন্ত্রক। এই ট্রেনের জন্য…

Mumbai Train Accident

ভারতীয় রেল (Indian Railways) আরও আধুনিকীকরণের পথে এক নতুন মাইলফলক ছুঁতে চলেছে। এবার ১৬ বগির নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিল রেলমন্ত্রক। এই ট্রেনের জন্য নতুন কোচ তৈরি হবে দক্ষিণ ভারতের তেলঙ্গনা রাজ্যের কাজিপেট এলাকায়। শীঘ্রই কাজিপেটে রেলের একটি নতুন আধুনিক কারখানার উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

এক সাংবাদিক বৈঠকে রেলমন্ত্রী বলেন, “দেশের যাত্রী পরিষেবার মান আরও উন্নত করতে আমরা ১৬ বগির নতুন ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই কোচগুলি তৈরি হবে কাজিপেটে স্থাপিত হতে চলা নতুন রেল কারখানায়।”

   

বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ যাত্রীবাহী ট্রেনে ৮ থেকে ১২টি বগি থাকে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপও বেড়েছে। সেই চাহিদা পূরণ করতেই বাড়ানো হচ্ছে কোচ সংখ্যা। ১৬ বগির ট্রেনে যেমন যাত্রী ধারণক্ষমতা বাড়বে, তেমনই বাড়বে পরিষেবার পরিসরও। দীর্ঘ দূরত্বের রুটে এই ধরনের ট্রেন বিশেষভাবে কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, মোট ১০০টি মেইন লাইন ইএমএউ মেমু ট্রেন তৈরি করা হবে। সেগুলি ১৬ কোচের হবে। পরবর্তীকালে ট্রেনগুলিকে ২০ কোচ করা হতে পারে বলেও জানান রেলমন্ত্রী। এছাড়াও ৫০টি ‘নমো-ভারত’ এসি প্যাসেঞ্জার ট্রেনও আনা হচ্ছে। কোচের সংখ্যা বৃদ্ধি হলে যাত্রীরা আরও আরামে স্বল্প দূরত্বের ট্রেন যাত্রা করতে পারবেন বলেই মনে করছে রেল। তবে নতুন ১০০টি মেমু ট্রেন কোন কোন শহরে চালানো হবে, সে ব্যাপারে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

তেলঙ্গনার কাজিপেটে তৈরি হচ্ছে ভারতের আরও একটি রেল কোচ কারখানা। এই নতুন কারখানাটি শুধুমাত্র কোচ নির্মাণই নয়, রক্ষণাবেক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নেবে বলে আশাবাদী রেল কর্তৃপক্ষ। রেলমন্ত্রী জানান, “এই কারখানা দক্ষিণ ভারতের রেল পরিকাঠামো উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হবে।”

এই কারখানায় বছরে প্রায় হাজারখানেক কোচ তৈরির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই খবরে উৎসাহের ঝড় উঠেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কাজিপেট ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

Advertisements

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও বলেন, “আমরা চেয়েছি ভারতীয় রেলকে বিশ্বমানের যাতায়াত পরিষেবা রূপে গড়ে তুলতে। নতুন কোচ, আধুনিক প্রযুক্তি, আধুনিক স্টেশন এবং ট্র্যাকের গুণমান উন্নয়নের দিকে আমাদের পূর্ণ নজর রয়েছে।”

তিনি জানান, রেলের আধুনিকীকরণের এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে আগামী দিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও কয়েকটি নতুন কোচ ও যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

১৬ বগির যাত্রীবাহী ট্রেন রেলের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়। এর ফলে শুধু ট্রেনযাত্রা আরও আরামদায়ক হবে না, দেশজুড়ে রেলের ক্ষমতা এবং পৌঁছনো আরও বিস্তৃত হবে। কাজিপেটের মতো একটি জায়গাকে বেছে নেওয়া রেলের কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যা দক্ষিণ ভারতের উন্নয়নের পথেও সহায়ক হবে।

এই ঘোষণা ভারতীয় রেলের ভবিষ্যৎ দিশা সম্পর্কে আশার আলো দেখাচ্ছে। যাত্রীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক বার্তা এবং ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন গতি যোগ করবে।