দল বিরোধী মন্তব্যে হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) নতুন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন হওয়ার পর প্রথম শোকজ নোটিশ (Shokoj Notice) পেলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুর বিধায়ক হুমায়ুন কবির (Humayun Kabir)। দলের শীর্ষ নেতাদের…

Humayun Kabir On Babri Masjid Claim For The Construction Of A New Babri Masjid In West Bengal

short-samachar

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) নতুন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন হওয়ার পর প্রথম শোকজ নোটিশ (Shokoj Notice) পেলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুর বিধায়ক হুমায়ুন কবির (Humayun Kabir)। দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে দল বিরোধী মন্তব্য করার জন্য তাঁকে শোকজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রে বলা হয়েছে, হুমায়ুন কবিরের মন্তব্য দলের শৃঙ্খলাবিরোধী ছিল এবং তা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।

   

এই ‘শোকজ’ নোটিশকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে এক নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, হুমায়ুন কবির কিছুদিন আগে অভিষেক ব্যানার্জির পক্ষ নিয়ে দলের সিনিয়র-জুনিয়র বিতর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি মমতা ব্যানার্জি এবং মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে কিছু বিতর্কিত বক্তব্যও রাখেন। তারই ফলশ্রুতিতে দলের শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটি তাঁকে শোকজ করেছে। দলের তরফে শোকজের জবাব দিতে তাঁকে তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

হুমায়ুন কবিরের রাজনৈতিক জীবন একটি নাটকীয় উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেছে। ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে রেজিনগর কেন্দ্রে জয়ী হওয়ার পর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ২০১৪ সালের শেষে দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনার পর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কংগ্রেস এবং বিজেপির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলেও, ২০২১ সালে আবারও তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন।

তবে গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে চলতে থাকা ‘সিনিয়র-জুনিয়র’ বিতর্কে হুমায়ুন অভিষেক ব্যানার্জির পক্ষ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন। তিনি এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জিকে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলেছিলেন।

এছাড়া, হুমায়ুন কবির রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে একাধিক বিবৃতি দেন। দলের বিরুদ্ধে এমন বক্তব্য রাখার কারণে তাঁকে শোকজ করা হয়। শোকজ নোটিশ পেয়ে হুমায়ুন কবির সংবাদমাধ্যমে বলেন, “সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকেই আমি শোকজের খবর পেয়েছি। চিঠি পেলে তার উত্তর দেব।” তিনি আরও বলেন, “২০১৫ সালেও আমাকে বিনা নোটিসে দলের থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমি কখনও দলের মধ্যে কারও ব্যক্তিগত অপমান করতে চাইনি, তবে মুর্শিদাবাদের রাজনীতি আলাদা।”

হুমায়ুন কবিরের শোকজ নোটিশের পর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে নতুন রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হতে পারে। দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপ এবং হুমায়ুন কবিরের উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দলের অভ্যন্তরীণ সংকট আরও গভীর হতে পারে যদি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি এই পদক্ষেপে কোনো কার্যকর ফল না পায়।

এখন দেখার বিষয় হবে, হুমায়ুন কবির তার শোকজ নোটিশের জবাবে কী বলেন এবং দলের অন্দরে এই নতুন বিতর্ক কিভাবে মোচন হয়।