ফের বিতর্কে হুমায়ুন, ফেরিঘাট দখলকে কেন্দ্র করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ বিধায়কের

তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুঁন কবির  (Humayun Kabir) আবারও বিতর্কের  (Controversy) মুখে পড়েছেন। দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণে তাকে শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে, সেই নোটিশের…

Humayun Kabir On Babri Masjid Claim For The Construction Of A New Babri Masjid In West Bengal

তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুঁন কবির  (Humayun Kabir) আবারও বিতর্কের  (Controversy) মুখে পড়েছেন। দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণে তাকে শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে, সেই নোটিশের পরও দলের বিরুদ্ধে তাঁর মন্তব্য থামেনি। এবার ফেরিঘাটের  (Ferry Ghat) দখল নিয়ে দলের ব্লক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে হুমায়ুঁন কবির চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন।

বৃহস্পতিবার, ভরতপুরের টেঁয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাবলা নদীর ওপর অবস্থিত একটি ফেরিঘাটের বরাত নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফেরিঘাটের বরাত পাওয়ার জন্য দুই দলের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হুমায়ুঁন কবির ও মোস্তাফিজুর রহমানের অনুগামীরা এই সংঘর্ষে জড়ায়। ব্লক কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি ও গোলমাল হয়, যা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

   

এই ঘটনায় হুমায়ুঁ কবির এক বিবৃতিতে বলেন, “ফেরিঘাটের দখল নিয়ে দলের একাংশ টাকা নয়ছয় ( Financial Corruption) করতে চাইছে। আমি থাকতে তা হতে দেব না।” এই মন্তব্যের ফলে তৃণমূল কংগ্রেসে আবারও অশান্তি শুরু হয়। দলের একাংশের দাবি, হুমায়ুঁন কবিরের এই মন্তব্য দলের স্বার্থে ক্ষতিকর হতে পারে এবং এটি দলের শৃঙ্খলাকেও ভঙ্গ করতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সতর্ক করেছিলেন, তখন তিনি কীভাবে ফের দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।

এদিকে, দলের একাংশের দাবি, হুমায়ুঁন কবিরের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অভিযোগ  (Allegations) জানানো হবে। তবে, দলের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “এটা আইনশৃঙ্খলার ব্যাপার। প্রশাসনকেই এর সমাধান করতে হবে। এতে দলের কিছু বলার নেই।”

হুমায়ুঁন কবিরের বিরুদ্ধে দলবিরোধী মন্তব্যের বিষয়টি নতুন নয়। গত সপ্তাহেই তাঁকে শো-কজ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল। সেই সময় হুমায়ুঁন কবিরকে বিধানসভায় সতর্ক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি তোমাকে আবারও সুযোগ দিলাম, কিন্তু দলের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করলে তোমার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এতে হুমায়ুঁন কবির নেত্রীর নির্দেশ মেনে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমি দলের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত। ভবিষ্যতে এমন কিছু করব না যা দলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।” তবে, কিছুদিন পরেই ফের তাঁর মন্তব্যে অশান্তি সৃষ্টি হওয়ায় তৃণমূলের অন্দরমহলে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

হুমায়ুঁন কবিরের এমন মন্তব্যের পর, দলের মধ্যে শৃঙ্খলার প্রশ্ন উঠেছে। দলের অনেক নেতার মতে, একে একে এমন মন্তব্যের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্যদিকে, কিছু নেতা মনে করছেন, হুমায়ুঁন কবিরের এ ধরনের মন্তব্যের পেছনে হয়তো তাঁর রাজনৈতিক প্রতিযোগীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা রয়েছে, যা তিনি প্রকাশ্যে আনছেন।

এ পরিস্থিতিতে, তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এই বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা তাদের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হুমায়ুঁন কবিরের এই ধরনের মন্তব্য দলের বিভক্তি ও অশান্তির কারণ হতে পারে। সুতরাং, আগামী দিনগুলোতে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য রাজনৈতিক সংকটের নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে পারে।

শেষমেষ, যতই হুমায়ুঁন কবির ক্ষমা চেয়ে থাকুন না কেন, দলের মধ্যে তাঁর অবস্থান কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। একদিকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সতর্কতা, অন্যদিকে হুমায়ুঁন কবিরের একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য এটি একটি নতুন দুঃসংবাদ হতে পারে।