হাওড়া স্টেশনে (Howrah Station) ৯০ বছরের পুরনো ‘বাঙালবাবুর ব্রিজ’ ভেঙে নতুন আধুনিক সেতু (modern bridge) তৈরি হতে চলেছে। এই ব্রিজটি হাওড়া স্টেশনে ঢোকার মুখে, প্ল্যাটফর্ম সিগন্যালের ঠিক পরেই অর্ধচন্দ্রাকৃতি আকারে নির্মিত ছিল। সেতুর মাঝ বরাবর সাত নম্বর স্তম্ভে একটি প্লেটে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘ইআইআর ১৯৩৩’, যা একে স্মরণীয় করে রেখেছে। এই সেতুর পরিচিত নাম ‘বাঙালবাবুর ব্রিজ’, তবে অনেকেই এটিকে ‘চাঁদমারি ব্রিজ’ নামেও চেনেন।
এটি ৯০ বছরের পুরনো সেতু, এবং বহুদিন ধরেই সেতুর অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই রেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই পুরনো সেতু ভেঙে তার জায়গায় আধুনিক মানের, আরও চওড়া নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। এই সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে হরিয়ানার এসপি সিংগলা কোম্পানি, যেটি মাঝেরহাট সেতু নির্মাণেও কাজ করেছে।
নতুন সেতুটি হবে চার লেনের, যা বিদ্যাসাগর সেতুর মতো কেব্ল স্টেড ডিজাইনে তৈরি হবে। সেতুর প্রধান অংশটি ১৩৪ মিটার দীর্ঘ এবং এটি একটি ৫০ মিটার পাইলনের সঙ্গে ইস্পাতের কেব্ল দিয়ে টানা থাকবে। অন্যদিকে, সেতুর বাকি ৬৬ মিটার অংশটি আরও একটি পাইলনের সাহায্যে স্থির থাকবে। নতুন সেতুর দু’টি লেন হবে সাড়ে সাত মিটার চওড়া, এবং সেতুর পাশে থাকবে চওড়া ফুটপাতও।
এখনকার সেতুটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে, কারণ আগামী দিনে হাওড়া স্টেশনে একাধিক প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে ২৬ বগির ট্রেনগুলি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য নতুন সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরনো সেতুর মধ্যে পিলার থাকায় প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছিল না, কিন্তু নতুন সেতুর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনও বাধা থাকবে না। নতুন সেতুটি এমনভাবে নির্মিত হবে যাতে রেলের অংশে কোনো পিলার না থাকে এবং প্ল্যাটফর্ম বৃদ্ধির কাজ বাধাহীনভাবে চলতে পারে।
এছাড়া, এই সেতু নির্মাণের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৮৪ কোটি টাকা, যা একটি বড় প্রকল্পের অংশ। এর ফলে হাওড়া স্টেশন ও এর আশেপাশের যাত্রীদের জন্য সুবিধা বাড়বে, পাশাপাশি আধুনিক সেতুটি শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করবে।
এদিকে, নতুন সেতুর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে, এবং আশা করা যাচ্ছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ হবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এই সেতু নির্মাণের ফলে হাওড়া স্টেশন এলাকার যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে আর কোনো সমস্যা হবে না, বরং আরও সুবিদিত হবে শহরের যানজট মোকাবিলা।