হাওড়া, ৭ অক্টোবর ২০২৫: হাওড়ার ব্যস্ত কালিবাবু বাজারে সোমবার দুপুরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, যখন স্থানীয়রা এক পুরোহিতকে জালনোট ব্যবহার করতে গিয়ে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে হাওড়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পুরোহিতকে আটক করে। তাঁর কাছ থেকে মোট আড়াই হাজার টাকার নকল ৫০০ টাকার নোট উদ্ধার হয়েছে।
কীভাবে ধরা পড়লেন পুরোহিত?
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত পুরোহিত স্থানীয় এক সবজি বিক্রেতা মহিলার কাছ থেকে সবজি কেনেন এবং তাকে পাঁচটি ৫০০ টাকার নোট দেন। প্রথমে মহিলা নোট গ্রহণ করলেও পরে নোটের গুণমান ও ছাপ দেখে সন্দেহ করেন। স্থানীয়দের সহায়তায় পুরোহিতকে ধরে ফেলেন তিনি এবং খবর দেন থানায়।
তদন্তে পুলিশের সন্দেহ
ধৃত পুরোহিতের আদি বাড়ি বিহারে হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাওড়ার একটি এলাকায় বসবাস করছিলেন। এলাকায় তিনি একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু পুলিশ মনে করছে, এটি কেবল বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর পেছনে একটি বড়সড় জালনোট চক্র সক্রিয় থাকতে পারে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতের মোবাইল ফোন, নথি ও যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিহারের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুরোহিতকে অনেক দিন ধরেই বাজারে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। তবে কেউ কল্পনাও করতে পারেননি যে তিনি জালনোট চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। এক ব্যবসায়ীর কথায়, “তিনি হয়তো অন্য কারও কাছ থেকে নোট পেয়েছিলেন, কিন্তু যদি নিজেই চক্রের অংশ হন, তা হলে তা ভয়ঙ্কর।”
পুলিশের বার্তা
পুলিশ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেছে, দৈনন্দিন লেনদেনের সময় নোট ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই যেন অবিলম্বে থানায় খবর দেওয়া হয়। ধৃত পুরোহিতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৮৯ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তাঁকে শিগগিরই আদালতে তোলা হবে এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
হাওড়া থানার এক সিনিয়র অফিসার বলেন, “আমরা সবদিক খতিয়ে দেখছি। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, এর পেছনে একটি সংগঠিত জালনোট চক্র সক্রিয়। অভিযানের মাধ্যমে চক্রটিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে।”
আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা
এই ঘটনার পর কালিবাবু বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, আরও জালনোট হয়তো বাজারে ঘুরছে। পুলিশ জানিয়েছে, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং জালনোট চক্র ধরতে অভিযান জারি থাকবে।