জিম মালিকের বাড়িতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ, বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে রক্তাক্ত তরুণী

নিউ বারাকপুরের মাইকেলনগর এলাকায় এক জিম মালিকের (Gym Owner) বাড়িতে চলছিল এক বেসরকারি পার্টি। সেই পার্টিতেই আমন্ত্রিত এক তরুণীর ওপর ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই…

জিম মালিকের বাড়িতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ, বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে রক্তাক্ত তরুণী

নিউ বারাকপুরের মাইকেলনগর এলাকায় এক জিম মালিকের (Gym Owner) বাড়িতে চলছিল এক বেসরকারি পার্টি। সেই পার্টিতেই আমন্ত্রিত এক তরুণীর ওপর ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই জিম মালিকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, তরুণীকে বাঁচাতে গেলে তাঁর এক পুরুষ বন্ধুর মাথায় মদের কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করা হয়। বন্ধুর রক্তাক্ত অবস্থার মধ্যেই কোনওক্রমে বাড়ি থেকে পালিয়ে বাঁচেন নির্যাতিতা। ঘটনার পরই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। জানা গিয়েছে, নিউ বারাকপুর থানার মাইকেলনগরের একটি দোতলা বাড়িতে পার্টির আয়োজন করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি, যিনি পেশায় এক জিমের মালিক (Gym Owner)। পার্টিতে মদ্যপানের আসর বসে। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন এক তরুণী ও তাঁর এক বন্ধু। অভিযোগ, কিছুক্ষণের মধ্যেই পার্টির পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

   

নির্যাতিতা তরুণীর অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রথমে তাঁকে অশালীনভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। পরে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সময় তরুণীর সঙ্গী, যিনিও আমন্ত্রিত ছিলেন পার্টিতে, বিষয়টি দেখতে পেয়ে তরুণীকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন। অভিযোগ, তখনই অভিযুক্ত জিম মালিক (Gym Owner) মদের কাচের বোতল দিয়ে ওই তরুণের মাথায় আঘাত করেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে ঘুষি, লাথিও মারা হয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তরুণীর বন্ধু। সেই সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি (Gym Owner) বাড়ির প্রধান দরজা বন্ধ করে দেন, যাতে তারা পালাতে না পারেন। কিন্তু তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি বুঝে তরুণী কোনওরকমে দরজা খুলে রক্তাক্ত বন্ধুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন এবং বিমানবন্দর থানায় পৌঁছন। সেখানেই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু ঘটনাস্থল বিমানবন্দর থানার অন্তর্গত নয়, সেই কারণে অভিযোগ স্থানান্তর করা হয়েছে নিউ বারাকপুর থানায়। বর্তমানে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নিউ বারাকপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisements

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে — যার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের চেষ্টা (IPC 376/511), শীলতাহানি (IPC 354), খুনের চেষ্টা (IPC 307), ও মারধরের অভিযোগ (IPC 323/325)।

এলাকায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা এমন অপরাধের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সাধারণ আমন্ত্রণ রক্ষার একটি পার্টিতেই যদি এমন বিপদের মুখে পড়তে হয়, তবে নারীদের নিরাপত্তা কোথায়?

নির্যাতিতার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী বলেই এতদিন পুলিশের হাত থেকে রেহাই পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এবার তাঁকে আইনের হাতে তুলে দিতেই হবে।

পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে ধরার জন্য একাধিক দল গঠন করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল ট্র্যাকিং সহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উপায়ে খোঁজ চলছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।