গুপ্তিপাড়ায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গঙ্গার ভাঙন (Guptipara Ganga) ঠেকানো হয়েছে। পিচের বস্তা দিয়ে ভাঙনের মোকাবিলা করা হয়েছে, যার ফলে ফেরি ঘাটের ধ্বংসস্তূপ এখন পরিণত হয়েছে এক নতুন রূপে। এই উদ্যোগের পরই, ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গুপ্তিপাড়া ফেরি ঘাটে শুরু হবে গঙ্গারতি।
বলাগড় ব্লকের প্রশাসন শনিবার এক বৈঠক আয়োজন করেছিল। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলাগড়ের বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অসীম মাজী, প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ সহ অন্যান্য পঞ্চায়েত সদস্যরা। বৈঠকটি ছিল মূলত গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উন্নয়ন নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এবং প্রয়োজনের ভিত্তিতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গুপ্তিপাড়া (Guptipara Ganga) ফেরি ঘাটের পাশে নতুন করে দু’বিঘা জমি ব্যবহার করে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। ওই স্থানে শশ্মান ঘাটের পাশেই গড়ে উঠবে ছোটদের জন্য একটি বিনোদন পার্ক, যেখানে থাকবে পানীয় জল এবং বিশ্রামের জায়গা। পাশাপাশি, গঙ্গার তীরে বসানো হবে একটি শিব মূর্তি। এতে বৃদ্ধরা সকাল-বিকেল সেখানে এসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। সন্ধ্যায় গঙ্গারতির আয়োজন হবে, যা এলাকাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
অসীম মাজী জানিয়েছেন, রাজ্যে ৩৫০০টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তবে গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত একমাত্র পঞ্চায়েত, যারা এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই প্রকল্পের জন্য। তিনি আরও বলেন, ‘এটি পর্যটন উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
স্থানীয় গ্রামবাসীরা মনে করেন, গঙ্গারতি এবং অন্যান্য নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে এলাকার ব্যাপক উন্নতি হবে। মানুষের যাতায়াত বাড়বে, বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। গ্রামবাসীরা জানান, শশ্মান ঘাট এলাকায় সাধারণত সন্ধ্যার পর মানুষের উপস্থিতি কম থাকে। কিন্তু গঙ্গারতি এবং বিনোদন পার্ক তৈরির ফলে যাতায়াত বাড়বে এবং এলাকায় মানুষের উপস্থিতি বাড়বে।
বিশ্বজিৎ নাগ জানিয়েছেন, প্রশাসনিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বলাগড় ব্লকের বিভিন্ন দেবদেউল, মন্দির, দরগা, মসজিদ এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থানগুলিকে নিয়ে একটি পর্যটন প্যাকেজ তৈরি করা হবে। এই প্যাকেজের মাধ্যমে আরও মানুষ এখানে আসবেন এবং স্থানীয় পর্যটন শিল্প বিকাশ পাবে।
গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগ অত্যন্ত অভিনব এবং তা প্রতিবেশী এলাকায় প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। স্থানীয় মানুষ এবং প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে এই প্রকল্পকে সফল করতে চান।
এলাকার মানুষজন মনে করছে, গুপ্তিপাড়া ফেরি ঘাট এবং তার আশেপাশের অঞ্চলের উন্নয়ন এলাকায় একটি নতুন দিশা তৈরি করবে। নতুন উদ্যোগে এলাকার পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।