কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে নতুন মোড় এনেছে পুলিশের তদন্ত। মনোজিত মিশ্রের ‘মাস্টারমাইন্ড’ অবস্থান ছিল কলেজের গার্ডরুমে, যেখানে তার ‘মজলিস’ হতো গান আর মদ্যপানের। এই গার্ডরুমই ছিল তার ‘মস্তানি’ করার স্পট। তার ঘনিষ্ঠ শাগরেদরা জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায় সেই আয়োজনের দায়িত্ব সামলাতেন। কখনও গার্ডরুম, কখনও ইউনিয়ন রুমে জমত মদ-গানের আসর।
মজলিসে মনোজিত একেকজন ছাত্রীকে ‘টার্গেট’
তদন্তে জানা গেছে, মজলিসের আগে মনোজিত একেকজন ছাত্রীকে ‘টার্গেট’ করতেন। তার এক সংকেতেই ওই ছাত্রীরা গার্ডরুমে পৌঁছে যেত। মদ আনাসহ যাবতীয় বন্দোবস্ত করতেন তার অনুগামীরা, যারা শুধু ছাত্রই নন, এমনকি জুনিয়র ছাত্রীরাও ছিল এই ‘দলবল’-এর অংশ। কলেজে নতুন আসা ছাত্রীদের ‘টার্গেট’ করে মনোজিতের জন্য পেশ করানোই ছিল তাদের কাজ। মনোজিতের কথা না মানলে তাদেরকে শাস্তি দিতে তাদেরই একাংশ ছাত্রীরা হাতুড়ি মারত, চুল ধরে টানত।
কলেজে ‘থ্রেট কালচার’ Guardroom Activities Exposed
কলেজে ‘থ্রেট কালচার’ চালানো হত এই গ্যাংয়ের মাধ্যমে হুমকি, মারধর, প্রতিবাদীদের বাড়িতে গিয়ে ভয়-ভীতি, মেয়েদের অশালীন ভাবে আক্রমণ, সবই ছিল তাদের নিত্য দিনের কর্মসূচি। কলেজের পড়ুয়ারা বলছেন, এদের হাত থেকে ক্যাম্পাসকে মুক্ত করতে না পারলে সুস্থ শিক্ষা পরিবেশ কখনোই ফিরবে না।
পুলিশের গার্ডরুম তল্লাশিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মিলেছে। রক্তের দাগ, যা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, সেখানে মদ্যপানের ভাঙা বোতলও উদ্ধার হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর ঘরের অস্থায়ী বিছানা ও সংলগ্ন শৌচালয়ের রক্তের দাগও তদন্তকারীদের নজরে। পাওয়া গেছে এক চাদর, যার ডিএনএ পরীক্ষা চলছে; প্রাথমিক অনুমান এটি বীর্যের দাগ।
এ ঘটনার পর কলেজ ও প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ঘটনার তদন্ত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে তৎপর তারা। Meanwhile, কলেজের ছাত্র সমাজের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ এখনও বজায় আছে।