কর্মীদের জন্য জিপিএফ সুদের হার ঘোষণা রাজ্য সরকারের

West Bengal Government Seeks Report on Delayed Banglar Bari Projects

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড (GPF Interest) এবং অন্যান্য সমতুল্য প্রভিডেন্ট ফান্ডে ৭.১ শতাংশ বার্ষিক সুদের হার বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার অর্থ দফতরের তরফে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১ জুলাই ২০২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই সুদের হার কার্যকর থাকবে।

Advertisements

এই সিদ্ধান্ত কার্যত রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, এবং অন্যান্য সরকার-নিয়ন্ত্রিত প্রভিডেন্ট ফান্ডে (GPF Interest) অবদানকারী কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। পশ্চিমবঙ্গ সার্ভিসেসের আওতাভুক্ত জিপিএফ, কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, এবং অন্যান্য স্বীকৃত সরকারি প্রভিডেন্ট স্কিম এই ঘোষণার আওতায় পড়বে।

   

এমন সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একদিকে কিছু কর্মী খুশি যে সুদের হার কমানো হয়নি, আবার অন্যদিকে বহু কর্মী আশা করেছিলেন, বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অন্তত কিছুটা হলেও সুদের হার বাড়ানো হবে।

একজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, “আমরা ভাবছিলাম যে এই ত্রৈমাসিকে সুদের হার ৭.৫ শতাংশের দিকে যাবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় কিছুটা হতাশ। তবে স্থিতাবস্থাও অন্তত ভালো।”

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্র সরকারের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারও তার কর্মীদের জন্য ২০২৫-২৬ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিপিএফ-সহ অন্যান্য প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার ৭.১ শতাংশই রেখেছে। এর ফলে, রাজ্য-কেন্দ্র সুদের হারে সামঞ্জস্য বজায় থাকছে।

এছাড়াও, রাজ্য কোষাগারের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ পড়া থেকে বিরত রাখার জন্যও এই সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, “রাজ্যের রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের হার বাড়ানো মানে বছরে হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয়। সেটা বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে বাস্তবসম্মত নয়।”

Advertisements

রাজ্য সরকার আগে থেকেই কিছুক্ষেত্রে ভাতা ও মহার্ঘ ভাতা (DA) সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে সতর্কতা অবলম্বন করছে। সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই জিপিএফ সুদের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ সৌম্যনাথ ঘোষ বলেন, “সুদের হার না বাড়লেও কমেনি, সেটাও একটা ইতিবাচক দিক। কর্মীদের জন্য এটা অন্তত নিশ্চিততা দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বার্তা দেয়।”

তবে সরকারি কর্মীদের একাংশ এখন কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য ভাতা ও সুবিধার সমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের মতে, জিপিএফ সুদের হার শুধু একটি দিক। সামগ্রিক আর্থিক সুবিধা ও কর্মপরিবেশের উন্নয়নই বেশি জরুরি।

সব মিলিয়ে, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনার জন্য উদ্বেগও।