ঘাটাল: বুধবার ঘাটালের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরব ভূমিকায় দেখা গেল সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব)-কে (Ghatal MP Dev)। সকাল থেকেই ঘাটালের প্রশাসনিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। দুপুর ১টা নাগাদ ঘাটাল মহকুমা শাসকের দপ্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন দেব। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদরী, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শংকর সারঙ্গী ও মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
এই বৈঠকে মূলত ঘাটাল মহকুমার জলবন্দি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ঘাটালের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে। ঘন ঘন ডিভিসি-র জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। দেব বলেন, “২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় আমরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা বলেছিলাম। ইতিমধ্যেই ৫০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট মঞ্জুর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে নতুন ডিজাইন তৈরি হয়েছে এবং কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়ে গিয়েছে। জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া দুমাসের মধ্যে শেষ হবে।”
বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেন, “ঘাটালের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জলের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। এটা অত্যন্ত কষ্টকর। আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।” পাশাপাশি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট তাঁকে নিশানা করায় দেব কটাক্ষ করে বলেন, “কাজ না করে শুধু সমালোচনা করলেই হবে না, পাশে দাঁড়াতে হবে।”
এরপর তিনি মধ্যাহ্নভোজ সারেন দলীয় কার্যালয়ে। বিকেলে ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে গভর্নিং বডির বৈঠকে যোগ দেন। এরপরই বিকেল ৪টা নাগাদ তিনি পৌঁছে যান বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে। সেখানে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সেখান থেকে খড়ার গ্রামে ত্রাণ বিলিতে যাওয়ার সময় এক স্থানীয় মহিলা তাঁর পথ আটকান। কাঁদতে কাঁদতে জানান, তার মেয়ে টিউশন পড়তে গিয়ে ২০ দিন ধরে নিখোঁজ। পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। দেব আশ্বাস দেন, খুব দ্রুত প্রশাসনের সহযোগিতায় নিখোঁজ মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই আশ্বাসে কিছুটা স্বস্তি পান হতভাগা মা।
শেষে সাংসদ পৌঁছে যান শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে, যেখানে তিনি ত্রাণসামগ্রী বিলি করেন জলবন্দি অসহায় মানুষদের মধ্যে। দেবের এই কর্মব্যস্ত দিন জুড়ে স্পষ্ট, শুধু সাংসদ হিসেবেই নয়, এক মানবিক প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি প্রস্তুত।