দুর্নীতি আর অরাজকতার গল্প আজ বাংলার প্রত্যেক দিনের রোজনামচা (Gas Scam)। সরকারি সম্পত্তি নিয়ে কালোবাজারির ইতিহাস আমাদের রাজ্যে অনেক পুরোনো হলেও এখন যেন তা আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ঠিক এরকমই সরকারী গ্যাস নিয়ে কালোবাজারি অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অনেক দিন থেকেই এই সরকারি গ্যাস নিয়ে করে চলেছে কালোবাজারি। স্বভাবতই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদাতে। কালোবাজারির খবর পেয়ে জোরদার অভিযানে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী সহ তিনজন’কে গ্রেফতার করেছে।
দিনের পর দিন সরকারি গ্যাস নিয়ে কালোবাজারি চলছিল মারিশদাতে। ডোমেস্টিক রান্নার গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের বেআইনি কারবার চালাচ্ছিল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এই মুহূর্তে পুলিশের জালে এক ব্যক্তি সহ তিনজন। আপাতত এরা প্রত্যেকেই স্থান পেয়েছেন শ্রীঘরে। কালীনগর বাজারে একটি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। খালি ও ভর্তি মিলিয়ে ৭০ টিরও বেশি সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
মারিশদা পুলিশ জানিয়েছে ধৃতরা হল, উত্তর কানাইদিঘির গ্রামের ব্যবসায়ী হরিপদ ঘোড়াই, পটাশপুর থানার দক্ষিণ সন্দলপুর গ্রামের তইমুস খান ও সাতশতমাল গ্রামের সোরাফ খান। ধৃতদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তদন্তের স্বার্থে ব্যবসায়ী হরিপদ ঘোড়াই’কে সাতদিনের পুলিয় হেফাজতের নির্দেশ দেন। বাকী দু’জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন কাঁথি আদালতে বিচারক। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূএে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কালীনগর বাজারে হরিপদ ঘোড়াইয়ের একটি দোকান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে গৃহস্থালি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বাণিজ্যিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হতো বলে অভিযোগ। চড়া দামে সেই বিক্রির কারবার চলত। যা রীতিমতো বেআইনি। গাড়িতে সেই সিলিন্ডার বহনের কাজ করত পেশার গাড়ীর চালক তইমুস খাঁন।
আর খালাসির কাজ করত সোরাফ খাঁন। কদিন ধরে এভাবে কালোবাজারি চালাতো ব্যবসায়ী হরিপদ ঘোড়াই। গোপন সূএে খবর পেয়ে পেয়ে কালীনগর বাজারে অভিযান চালায় মারিশদা থানায় পুলিশ।সেখান থেকে গাড়ি সহ সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করা হয়। গ্রেফতার ব্যবসায়ী সহ তিনজন সহযোগী।
মারিশদা থানার ওসি উজ্জ্বল নস্কর বলেন ” বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। বিস্তারিত জানতে হেফাজতে নেওয়া ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে “। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান ” দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এই চোরাকারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল ওই ব্যবসায়ী। গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই “।
এই ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মানুষ। তারা বেশিরভাগ ই বলেছেন সরকারি সম্পত্তি যারা তছরুপ করছে তাদের কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হোক। আবার অনেকে বলেছেন গ্যাসের যা দাম তাতে মধ্যবিত্ত বাঙালি হিমশিম খাচ্ছে। তার উপরে কিছু দুর্নীতিপরায়ণ লোক এইভাবে মানুষের সঙ্গে তঞ্চকতা করছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।