গঙ্গাসাগর মেলায় বাড়তি নিরাপত্তা প্রশাসনের, ব্যবহার করা হবে ইসরোর বিশেষ প্রযুক্তি

বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। সুন্দরবনের জল সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ এবং উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar) মেলা (fair)নিরাপত্তার (security) বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলার…

Ganga Sagar fair security

বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। সুন্দরবনের জল সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ এবং উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar) মেলা (fair)নিরাপত্তার (security) বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নবান্নে গঙ্গাসাগর নিয়ে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এ বারের মেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ।ব্যবহার করা হবে ইসরোর (ISRO) বিশেষ প্রযুক্তি (technology)।

মেলায় আগত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে উইনার্স টিমকে ব্যবহার করা হবে। থাকছে কুইক রেসপন্স টিম ও বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াড। নদীপথেও স্পিডবোট এবং লঞ্চ দিয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। মেলাজুড়ে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন। সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন থাকবে।

উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিএসএফকেও সতর্ক করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মেলা চলাকালীন উপকূল রক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে জলপথে ছোট জাহাজ, হোভারক্রাফ্টে করে নজরদারি চালানো হবে। মেলা চলাকালীন গঙ্গাসাগরের উপর হেলিকপ্টার, এয়ারক্রাফ্ট এবং ড্রোনিয়ারের মাধ্যমে উপকূলরক্ষী বাহিনী নজরদারি চালাবে।

মেলায় আসা ভিন রাজ্যের তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলাকালীন সমুদ্র এবং নদীতে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরা এবং সাধারণ যাত্রী পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে জেলা প্রশাসন। মেলা প্রাঙ্গণে বাড়ানো হবে ওয়াচ টাওয়ার।

রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য আইবিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে মেলা চলাকালীন গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হবে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলার নিরাপত্তা বিষয়ক চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ চালাচ্ছে।’

Advertisements

গঙ্গাসাগর মেলায় মুড়িগঙ্গা নদী পারাপারের ক্ষেত্রে এ বারও ইসরোর তৈরি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি ভেসেল এবং বার্জে ইসরোর বিশেষ প্রযুক্তির ডিভাইস লাগানো থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে সেই ডিভাইসকে কাজে লাগিয়ে লোকেশন বুঝে অন্ধকারে বা কুয়াশার মধ্যে ভেসেল এবং বার্জের সারেঙ সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। পাশাপাশি নদীর জলের নাব্যতাও জানতে পারবেন তাঁরা।ছর ধরেই মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে চড়া পড়ে কাকদ্বীপের লট নম্বর আট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া জেটিঘাটে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের। কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকার ফলে মাঝেমধ্যেই নদীতে দিগ্ভ্রষ্ট হয়ে যায় ভেসেল ও বার্জ। এ বার তাই ইসরোর বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। সে জন্য প্রত্যেকটি ভেসেল এবং বার্জের সারেঙদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কন্ট্রোল রুম থেকে সারেঙদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবহার করা হবে।

কুয়াশা মোকাবিলাতেও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। অত্যাধুনিক ফগ লাইটের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মুড়িগঙ্গা নদীতে ইলেকট্রিক টাওয়ারে প্রায় ছশোটি ফগ লাইট, লেজ়ার লাইট-সহ পাঁচ রকমের আলো লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিমানবন্দরে যে মুভিং লাইট থাকে, সেই লাইটও লাগানো হতে পারে। অতিরিক্ত কুয়াশা হলে তখনই এই লাইট জ্বালানো হবে।

সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানান, ‘নিরাপত্তার পাশাপাশি তীর্থযাত্রীদের স্বাচ্ছন্দের কথা মাথায় রেখে মেলা প্রাঙ্গণে যাত্রী শেড, পানীয় জল, শৌচাগার এবং নতুন স্নানের ঘাট সহ সমস্ত রকম পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিকাঠামোর তৈরির প্রস্তুতির কাজ চলছে। মুড়িগঙ্গা নদীতে পুরোদমে ড্রেজিং চলছে। আগামী দিনে গঙ্গাসাগর তীর্থক্ষেত্রকে গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই একমাত্র লক্ষ্য আমাদের সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী খুব শীঘ্রই মেলার পরিদর্শনে আসবেন।