দুর্গাপুজোর ধুমধাম পেরিয়ে শহর এখন মুখিয়ে কালীপুজোর (Kalipuja in West Bengal) প্রস্তুতিতে। আর এই সময়েই ধনধান্য স্টেডিয়ামে আয়োজিত হল কালীপুজো নিয়ে কলকাতা পুলিশের সমন্বয় বৈঠক। বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ ভর্মা, কলকাতা পুরসভার, দমকল বিভাগের ও অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের প্রতিনিধিরা। শহরের প্রায় সমস্ত বড় পুজো কমিটির উদ্যোক্তারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
এদিনের বৈঠকে মূলত তিনটি বিষয় ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে—দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোয় কার্নিভালের আয়োজন, বিদ্যুৎ বিলে ছাড় এবং বাজি ও ফানুস নিয়ে সতর্কতা। বৈঠকে বহু উদ্যোক্তা দাবি তোলেন, দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজোতেও যেন কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। তাঁদের মতে, কালীপুজোও এখন শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিসেবেও বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। সেই কারণে পুজোর মর্যাদা এবং প্রচারের জন্য শহরজুড়ে একটি কার্নিভাল আয়োজনের প্রস্তাব রাখেন তাঁরা।
উদ্যোক্তা আশিস রায় বলেন, “কলকাতা পুলিশের আমন্ত্রণে আমরা এই বৈঠকে এসেছিলাম। নগরপালকেও আমাদের বক্তব্য জানাই। দুর্গাপুজোয় যদি অনুদান, কার্নিভাল ও বিদ্যুৎ বিলে ছাড় পাওয়া যায়, কালীপুজোয় তা হবে না কেন?” তিনি আরও বলেন, *“আমরা চাইছি, বিদ্যুৎ বিলে কিছুটা ছাড় দেওয়া হোক। এই সময় আলোর সাজে পুজো মণ্ডপ আলোকিত করা হয়, ফলে বিদ্যুৎ খরচ প্রচুর হয়। যদি সরকারি ভাবে কিছু ছাড় মেলে, তাহলে অনেক কমিটি উপকৃত হবে।”
পাশাপাশি, উৎসবের আনন্দে কোনওভাবে আইন ভাঙা চলবে না—এই বার্তা স্পষ্ট ভাষায় দিয়ে দেন নগরপাল মনোজ ভর্মা। তিনি বলেন, বাজি পোড়ানো বা ফানুস ওড়ানোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম মানতেই হবে। পরিবেশ দূষণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি মাথায় রেখে সব পুজো কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা উচ্চডেসিবেল বাজি ব্যবহার না করে এবং অনুমোদনহীন ফানুস না ওড়ায়।
নগরপাল জানান, পুলিশ প্রশাসন ও দমকল বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পুজোর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। যে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধিরাও। তাঁরা জানান, মণ্ডপের সাফাই, জঞ্জাল পরিষ্কার, অস্থায়ী আলো ও পানীয় জলের ব্যবস্থা নিয়ে পুরসভা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দমকল বিভাগ থেকেও জানানো হয়েছে, বড় পুজো মণ্ডপে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র থাকা বাধ্যতামূলক।