হু হু করে ঢুকছে নদীর জল, তিস্তার ‘ক্রোধ’ চোখ রাঙাচ্ছে ‘৬৮’র আতঙ্ক!

বন্যা পরিস্থিতি

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িঃ  লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা। বিগত এক সপ্তাহের ওপর টানা বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতে। সিকিমে তিস্তা ফুলে ফেঁপে ওঠায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর ফলে প্রবল বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় দার্জিলিং, কালিম্পঙের মতো জেলাগুলিকে। ভয়ানক ধসে ১০ নং জাতীয় সড়ক ভেঙে পড়ায় পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের একাধিক জেলার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তবে কোথাও কোথাও ধীরগতিতে কিছু যানবাহনের চলাচল করছে। 

Advertisements

১০ জুলাই উপনির্বাচন, কোথায় এগিয়ে কে? দেখুন লোকসভা ভোটের নিরিখে ৪ বিধানসভার ফল

তিস্তা বাজার, সেবক সহ একাধিক এলাকায় তিস্তার জল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। পাহাড়ের রাস্তায় নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় স্বাভাবিকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সমগ্র এলাকায়। আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া হয়েছেন অনেকেই। তবে বিগত কয়েকদিন ভয়াবহ বর্ষণে বন্য পরিস্থিতি শুধুমাত্র পাহাড়ি এলাকাতেই আর সীমাবদ্ধ নেই। 

সীমান্তজুড়ে রমরমিয়ে চলছে বেআইনি পাচার! ‘অভিযুক্ত’ মোদীর মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর

জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের মতো জেলাগুলিতেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন জলপাইগুড়ি জেলার একাধিক এলাকা। মহকুমা সদর শহর জলপাইগুড়িতেও বেড়েছে করলা নদীর জল । যারফলে শহরের একাধিক এলাকা ইতিমধ্যেই জলমগ্ন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় করলা নদীর জল ঢুকেছে। সেই সঙ্গে তিস্তা নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় দোমহনি, গজলডোবার মতো একাধিক এলাকায় বন্যাপরিস্থির মতো অবস্থা। শহরের একাধিক ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

Advertisements

জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন উঠত শুরু করেছে, এইভাবে নদীর জল ঢুকে যাওয়ায় অতীতে ১৯৬৮ সালের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না তো? বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই সেই অতীতের ভয়াবহতা চাক্ষুষ করেননি। তাঁদের অনেকেই বাবা-কাকাদের মুখে জলপাইগুড়ি শহরে ১৯৬৮ সালের সেই ভয়াবহ বন্যার কথা হয়তো শুনেছেন। কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে বাঁধ ভাঙা জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছিল গোটা শহর। হাজার হাজার লাশের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিল বহু মানুষের ভিঁটে মাটি ও শেষ আশ্রয়। এবারও কি তার পুনরাবৃত্তি হবে? দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে শহরবাসীর। 

ধ্বংসস্তূপ সরাতেই মিলছে একের পর লাশ, গুজরাতে বহুতল-বিপর্যয়ে মৃত বেড়ে ৭

এরমধ্যে লাগাতার বৃষ্টির ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে কিনা, তা নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।পার্শ্ববর্তী জেলা আলিপুরদুয়ারের পরিস্থিতিও সুবিধাজনক নয়। পুরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড-সহ একাধিক এলাকায় বৃষ্টির জল জমেছে। পুরপ্রধান প্রসেনজিৎ কর বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। প্রয়োজন অনুযায়ী, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্যদিকে, কোচবিহারে তোর্সা নদীর জলে বলরামপুরের শোলাডাঙা গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কয়েকশো বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। গ্রামের রাস্তা জলে ডুবে গিয়েছে। বৃষ্টির জলে কোচবিহার শহরের কয়েকটি রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের নাটাবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জাইগির চিলাখানা, সাহাপাড়া এলাকায় গদাধর নদীর ভাঙনে প্রায় দু’শো বাড়িতে জল ঢুকে যায়। বৃষ্টিতে তুফানগঞ্জ পুরসভা এলাকায় কয়েকটি জায়গায় জল ঢুকেছে।