নৈহাটির (Naihati Fire) রেল মাঠে রবিবার এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কালীপুজোর ঠিক একদিন আগে এই বিপর্যয় ঘটে, যখন শহরটি উৎসবের প্রস্তুতিতে মগ্ন ছিল। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে একাধিক খাবারের দোকান, যার ফলে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকার মানুষের মতে, ওই সময় নৈহাটির রেল মাঠে বেশ কিছু খাবারের দোকান ছিল, যা সাধারণত ক্রেতাদের ভিড়ে পূর্ণ থাকে। রবিবার বিকেলে যখন এলাকার জনতা কালীপুজোর আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তখন অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। স্থানীয়রা জানান, আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, অল্প কিছু সময়ের মধ্যে কয়েকটি দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। দ্রুতই ছড়িয়ে পড়া আগুনে অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় পাঁচটি দোকান পুরোপুরি পুড়ে যায় এবং বেশ কিছু গুদামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরই এলাকাবাসী সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় কিছু মানুষ দমকল বাহিনী এবং পুলিশের কাছে খবর দেন। পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য স্থানীয়রা নিজেদের মতো করে চেষ্টা চালান। তবে ততক্ষণে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। দমকল বাহিনী প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, কিন্তু এর পরিণতি খুবই ভয়াবহ ছিল। দোকানগুলোর মধ্যে রাখা খাদ্যসামগ্রী, কিচেন সরঞ্জাম এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী সবই পুড়ে যায়।
এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে শুধু যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, তা নয়, সামাজিকভাবেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। কালীপুজোর আগে এমন একটি ঘটনা শহরের ব্যবসায়ী মহলে বড় ধাক্কা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগ ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে, এবং প্রাথমিক তদন্তে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় এক দোকানদার জানান, ‘‘কালীপুজোর আগে যখন ব্যবসা ভালো চলছিল, ঠিক সেই সময় এই আগুন লাগার কারণে একদিকে যেমন আমাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, অন্যদিকে উৎসবের পরিবেশও বিষাদময় হয়ে গেছে।’’ তবে, দমকল বাহিনীর কর্মীরা জানান, সঠিক কারণ জানা না গেলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, শর্ট সার্কিটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
প্রশাসন দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে, তবে ব্যবসায়ীরা ততক্ষণে তাদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, আগুনের ভয়াবহতা এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও, উৎসবের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে এমন পরিস্থিতি পুনরায় সৃষ্টি না হয়।