মানালী দত্ত: মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় (Farakka) শিশু কন্যা নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ হিসেবে ডিওয়াইএফআইয়ের (DYFI) উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে ফারাক্কার দু নম্বর কলোনির চরক তলা থেকে এই মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্যের সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী, যিনি এই ঘটনায় সরকারের নীরবতা এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।
মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, “বিচার চাইতে আজ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। যদি সরকার চুপ করে বসে থাকে এবং অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে, তাহলে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “পশ্চিমবঙ্গের মেয়েরা বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছেন। ফারাক্কা থেকে জয়নগর, সব জায়গায় নির্যাতনের বিচার চাওয়া হচ্ছে।”
মিছিলটি মূলত স্থানীয় যুবকদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এবং এতে প্রচুর মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা হত্যার বিচারের দাবি জানান এবং সরকারের প্রতি নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মীনাক্ষী বলেন, “সরকার যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারে, তাহলে দুর্নীতি বৃদ্ধি পাবে।”
মীনাক্ষী মুখার্জী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “এই রাজ্যে ধর্ষণ ও দুর্নীতির পরিসংখ্যান কী, সে সম্পর্কে রাজ্য সরকার কোনও তথ্য দেবে না। যারা মানুষকে ভোট দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছে, তারা এই পরিসংখ্যান দিতে অস্বীকার করবে।”
এই বিক্ষোভ মিছিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজে নারী নির্যাতনের অবসান ঘটানো এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো। মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, “এই সরকারের উচিত হবে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করা, অন্যথায় তারা জনগণের ক্ষোভের শিকার হবে।”
মিছিল শেষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেন যে তারা এ বিষয়ে আরেকটি সভা ডাকবেন, যাতে সমাজের সকল স্তরের মানুষ একত্রিত হয়ে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। মীনাক্ষী জানান, “আমরা এই ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
ফারাক্কায় এই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি সমগ্র রাজ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে এবং মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। তাই মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, “সরকারকে ভাবতে হবে যে তারা নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে কতটা সত্যিই উদ্বিগ্ন।”
এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে, এবং সরকারের উচিত হবে সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তবে মীনাক্ষী মুখার্জী আশাবাদী যে, সাধারণ মানুষ নিজেদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে প্রস্তুত।
মিছিলের শেষে বিভিন্ন বক্তা তাদের বক্তব্যে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধের জন্য আরও কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানান। তারা বলেন, “যদি আমরা একত্রিত হই, তাহলে আমরা পরিবর্তন আনতে পারব। আমাদের মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
ফারাক্কার এই ঘটনা শুধুমাত্র স্থানীয় নয়, বরং এটি দেশের অন্যান্য স্থানের জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের উচিত হবে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।