ভুয়ো পরিচয়ে পঞ্চায়েত প্রধান, সরানো হলো TMC নেত্রীকে

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, লাভলি খাতুন নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক জাল নথিপত্র ব্যবহার করে…

Congress Expels Shankar Malakar from All Posts Amid TMC Defection Buzz

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, লাভলি খাতুন নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক জাল নথিপত্র ব্যবহার করে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ দখল করেছিলেন। ভুয়ো বাবার নাম ব্যবহার করে এবং সাক্ষীদের সই জালিয়াতির মাধ্যমে ওবিসি শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। এই শংসাপত্রের সাহায্যে তিনি সংরক্ষিত প্রধান পদে নির্বাচিত হন। তবে বিষয়টি সামনে আসতেই প্রশাসনের নির্দেশে তাঁকে প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

লাভলি খাতুন ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়াই করে জয়ী হন। পরে সুবিধার জন্য তিনি তৃণমূলে যোগ দেন এবং প্রধানের পদ গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূলেরই এক পরাজিত প্রার্থী রাহেনা সুলতানা। তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে অভিযোগ করেন যে লাভলি খাতুন বাংলাদেশের নাগরিক এবং জাল শংসাপত্র তৈরি করে প্রধান হয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে মহকুমা শাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে দেখা যায়, লাভলি খাতুন ভুয়ো বাবার নাম ব্যবহার করে ও সাক্ষীদের সই জালিয়াতি করে ওবিসি শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। আদালতের কাছে এই রিপোর্ট জমা পড়তেই লাভলি খাতুনকে শোকজ করা হয়। এরপরই তাঁর প্রধান পদ বাতিলের নির্দেশ আসে।

   

প্রশাসনের নির্দেশে লাভলি খাতুনকে সরিয়ে দিয়ে উপ-প্রধান একরামুল হককে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে লাভলি খাতুনের শুধুমাত্র প্রধান পদ বাতিল করা হলেও এখনো সদস্য পদ খারিজ হয়নি, যা নিয়ে বিরোধীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি এই বিষয়ে বলেন, “লাভলি খাতুনের বাংলাদেশের যোগ থাকতে পারে। প্রশাসন চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে শুধু প্রধান পদ নয়, তাঁর সদস্য পদও বাতিল করা হোক এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হোক।” অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র বলেন, “বাংলায় প্রশাসন সঠিকভাবে কাজ করছে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য কেউ নয়, আমাদের প্রশাসনই এই ব্যবস্থা নিয়েছে।”

Advertisements

কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “লাভলি আগে কংগ্রেসে ছিলেন, কিন্তু সুবিধার জন্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপি এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, শুধুমাত্র প্রধান পদ বাতিল করলেই হবে না, লাভলি খাতুন কীভাবে জাল নথি তৈরি করলেন এবং তাঁর আসল পরিচয় কী, তা গভীরভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এতদিন তিনি প্রধান পদে ছিলেন? জাল নথিপত্রের মাধ্যমে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হওয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে বসা রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা নিয়েও বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এই ঘটনার পর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের নথি যাচাই করার প্রক্রিয়া আরও কঠোর করার দাবি তুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News