সোনা কেনার ফাঁদে প্রতারণা, গ্রেফতার দুষ্কৃতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহিষাদল: কম দামে সোনা পাইয়ে দেওয়ার নামে ফাঁদ পেতে হাওড়ার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পূর্ব…

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহিষাদল: কম দামে সোনা পাইয়ে দেওয়ার নামে ফাঁদ পেতে হাওড়ার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে (Mahishadal) পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে এক দুষ্কৃতি। ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়া অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২৭ লক্ষ টাকা এবং ১২টি সোনার বাট, যার মধ্যে একাধিকটি নকল। এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার শ্যামপুর এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদীপ সামন্তর সঙ্গে মহিষাদলের উত্তর কাশিমনগরের হাসেম সেকের বহুদিনের পরিচয় ছিল। সেই সম্পর্কের সুযোগ নিয়েই হাসেম প্রদীপবাবুকে কম দামে সোনা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। ১৫ সেপ্টেম্বর হাসেম তাঁকে মহিষাদলের গাড়ুঘাটায় ডাকে। সেখানে কালীমন্দিরের কাছে হাসেমের সঙ্গে হাজির হয় তার দুই সহযোগী তপন বেরা ও বিশ্বজিৎ মুখার্জি। বিশ্বজিৎ প্রদীপবাবুকে কিছু সোনার বাট দেখায়। তবে সেদিন ব্যবসায়ীর কাছে টাকা না থাকায় তিনি পরে যোগাযোগের আশ্বাস দিয়ে চলে যান।

   

এরপর ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে প্রদীপবাবু হাসেমকে সঙ্গে নিয়ে আবারও সেই জায়গায় হাজির হন সোনা কেনার উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌঁছে তপন ও বিশ্বজিৎ প্রথমেই টাকা দাবি করে। প্রদীপবাবু আগে সোনা দেখার অনুরোধ করলে অভিযুক্তরা তাঁকে মারধরের হুমকি দেয়। এমন সময়ে “পুলিশ” লেখা দুটি গাড়ি সেখানে এসে দাঁড়ায় এবং সেখান থেকে ১০–১২ জন ফাইবার লাঠি হাতে প্রদীপবাবুর দিকে এগিয়ে আসে।

পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তপন ও বিশ্বজিৎ প্রদীপবাবুর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা কেড়ে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে এবং বাকিরাও পালিয়ে যায়। প্রতারণার শিকার বুঝতে পেরে প্রদীপবাবু মহিষাদল থানায় হাসেম সেক, তপন বেরা, বিশ্বজিৎ মুখার্জি এবং আরও ১০–১২ জন অচেনা ব্যক্তির নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে উত্তর কাশিমনগর থেকে তপন বেরাকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় ২৭ লক্ষ টাকা এবং ১২টি সোনার বাট। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সোনার মধ্যে একাধিক নকল। অভিযুক্তকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হলে তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

প্রদীপ সামন্ত বলেন, “হাসেমকে আমি এবং আমার পরিবার বহুদিন ধরে চিনতাম। তার উপর ভরসা করেই সোনা কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু এভাবে প্রতারিত হব, তা কখনও ভাবিনি।”

ডিএসপি (ডিইবি) শান্তব্রত চন্দ বলেন, “তদন্তে আরও বেশ কিছু নাম উঠে এসেছে। তাদের খোঁজে অভিযান চলছে। গ্রেফতার তপনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেছে, অচেনা ব্যক্তির প্রলোভনে বিশ্বাস না করতে এবং বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের আগে যথাযথ যাচাই করে নিতে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News