ফের বিতর্কে শেখ শাহজাহান, গেস্টহাউসে উদ্ধার ১০ কোটির জাল নোট

সন্দেশখালিতে ফের চাঞ্চল্য। শেখ শাহজাহানের মালিকানাধীন একটি গেস্টহাউস থেকে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ জাল নোট (Fake Currency)। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ…

ফের বিতর্কে শেখ শাহজাহান, গেস্টহাউসে উদ্ধার ১০ কোটির জাল নোট

সন্দেশখালিতে ফের চাঞ্চল্য। শেখ শাহজাহানের মালিকানাধীন একটি গেস্টহাউস থেকে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ জাল নোট (Fake Currency)। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে — মহেশতলার দেবব্রত চক্রবর্তী এবং মটরদিঘির বাসিন্দা সিরাজউদ্দিন মোল্লা।

পুলিশ সূত্রের খবর, বসিরহাট জেলা পুলিশের বিশেষ একটি দল গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে এই বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার করে। কার্টনে করে লুকানো ছিল এই নোটের বান্ডিল, যার ওপরের দিকে রাখা ছিল আসল নোট—যাতে সহজে ধরা না পড়ে। বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, এই জাল নোট একটি বড়সড় পাচারচক্রের অংশ।

   

পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা এই চক্রের উৎস সন্ধানে তদন্ত চালাচ্ছি। কীভাবে, কেন এবং কাদের মাধ্যমে এই গেস্টহাউসে এই বিপুল পরিমাণ জাল নোট এল, তার খোঁজ চলছে। এই টাকা কোথায় পাঠানো হত এবং কী কাজে ব্যবহৃত হত, তা জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

এই ঘটনার পর সন্দেশখালি জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। বিশেষ করে শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে, যারা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় জাল নোটের ব্যবসা চালাচ্ছিল।

প্রসঙ্গত, শেখ শাহজাহান বর্তমানে জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে—মহিলাদের উপর নির্যাতন, জমি দখল, সন্ত্রাস ছড়ানো সহ নানা অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত। এর মাঝেই তাঁর গেস্টহাউসে এই জাল নোট উদ্ধারের ঘটনা ফের একবার রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে।

Advertisements

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এই ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “সীমান্ত লাগোয়া সন্দেশখালি ফের একবার খবরে এসেছে। এবার জাল নোটের জন্য খবরে এই ছোট্ট শহর। অসহায় নারীদের ধর্ষণ, জমি দখল থেকে এখন জাল নোটের কারবার—এই সব অপরাধের মূলেই রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শেখ শাহজাহান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রক্ষা করেছেন। এই ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলার অবনতি নয়, বরং রাজ্যের প্রত্যক্ষ মদতে অপরাধের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে সন্দেশখালি।”

তিনি আরও বলেন, “মমতা ছাড়া আর কেউ বাংলার এত ক্ষতি করেননি। পশ্চিমবঙ্গবাসী ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে, আর এমন এক সরকার যেটা অপরাধীদের ঢাল হয়ে থাকে, সেটা মানুষের জন্য নয়।”

এই ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী দিনে এই ঘটনা ঘিরে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে রাজ্য রাজনীতি। আইন-শৃঙ্খলা এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা প্রশ্নে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে বড় প্রশ্ন।