ডুয়ার্সে রেললাইনে হাতি, ট্রেন থামালেন চালক

বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ডুয়ার্সের (Duars) ক্যারন ও বানারহাট স্টেশনের মাঝের রেললাইন (railway line) এলাকায় এক বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে। রেললাইনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি…

Elephant calf dies after falling into a tea garden drain, enraged mother Elephant Attack goes on a rampage.

বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ডুয়ার্সের (Duars) ক্যারন ও বানারহাট স্টেশনের মাঝের রেললাইন (railway line) এলাকায় এক বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে। রেললাইনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি হাতি(Elephant)। হঠাৎ সে রেললাইনে চলে আসে। তবে, মহানন্দা এক্সপ্রেসের চালক (driver) পি.এন. টোপ্পো এবং সহকারী চালক শুভজিৎ শীলের তৎপরতায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি প্রাণঘাতী হতে পারেনি। তাদের সতর্কতা এবং দ্রুত সিদ্ধান্তের কারণে হাতিটি রেললাইন থেকে নিরাপদে সরে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেনি।

ঘটনার সূত্রপাত ছিল যখন রেললাইন বরাবর একটি হাতি চলছিল। ট্রেনের হেডলাইটের আলোয় সেটি দৃশ্যমান হয়ে পড়ে এবং চালকদ্বয় সেটি লক্ষ্য করেন। এই অবস্থায় তারা দ্রুত আপৎকালীন ব্রেক প্রয়োগ করেন, যাতে ট্রেনটি থেমে যায় এবং হাতিটি নিরাপদভাবে রেললাইন থেকে সরে যেতে পারে। কিছুক্ষণ পরে, হাতিটি রেললাইন থেকে সরে গিয়ে জঙ্গলের দিকে চলে যায় এবং ট্রেনটি আবারও নিজের গন্তব্যে যাত্রা শুরু করে।

   

এই ঘটনার পর পরিবেশপ্রেমীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, কারণ কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি এবং বন্যপ্রাণীও নিরাপদে রক্ষা পেয়েছে। বিশেষত, ডুয়ার্স অঞ্চলে যেখানে একাধিক জঙ্গল রয়েছে এবং সেখানে রাস্তা ও রেললাইন মিশে গেছে, সেখানে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। এই ধরনের ঘটনা অতীতে দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে, তবে চালকদের সতর্কতা ও সচেতনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

ডুয়ার্সের রেললাইনের পাশ দিয়ে যখন হাতি বা অন্যান্য বন্যপ্রাণী চলাচল করে, তখন তা প্রায়ই একটি বড় ধরনের বিপদ সৃষ্টি করে। অনেক সময় এসব বন্যপ্রাণী রেললাইনের ওপর চলে আসে, যার ফলে ট্রেনের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকে। অতীতে কিছু দুর্ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষের ফলে প্রাণহানি হয়েছে। তবে, চালকদের তৎপরতা এবং বন বিভাগের পর্যবেক্ষণের কারণে এসব দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

এদিনের ঘটনার পরে, বন দপ্তর এবং পরিবেশপ্রেমী মহল আবারও সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, রেললাইন ও রাস্তার সংযোগস্থলগুলোতে বন্যপ্রাণীর চলাচলের সময় ট্রেন চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে এবং পরিবেশগত সংরক্ষণে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা যাতে আরও না ঘটে, তার জন্য রেললাইনের পাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সতর্কতা সঙ্কেত আরও দৃঢ় করা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, ডুয়ার্সের মতো জঙ্গল ও বনাঞ্চলে যেখানে বন্যপ্রাণী ও মানুষের বসবাস একত্রে রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তার জন্য একটি কার্যকরী সমন্বয়ের প্রয়োজন। বন বিভাগ, রেল কর্তৃপক্ষ এবং পরিবেশ সংগঠনগুলোকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে যাতে এই ধরনের বিপদ থেকে বন্যপ্রাণী এবং মানব জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

এদিনের ঘটনাটি প্রমাণ করেছে, সঠিক সময় এবং দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে কোনো দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। চালক পি.এন. টোপ্পো এবং সহকারী চালক শুভজিৎ শীলের তৎপরতা প্রশংসনীয়, কারণ তারা তাদের কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা এবং সতর্কতার পরিচয় দিয়েছেন। এমন ঘটনায় প্রমাণিত হলো, একমাত্র মানুষের সচেতনতা এবং উদ্যোগই বন্যপ্রাণী এবং মানুষের মধ্যে সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করতে পারে।